খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : ২৮ বছর বয়সেই বিরাটের ওডিআই সেঞ্চুরির সংখ্যা তাঁর বয়সকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে। বিরাট যেখানে ২৫টি শতরানের মালিক, সেখানে ১০টি শতরান করে সমবয়সী রোহিত অনেকটাই পিছিয়ে। ভারতের হয়ে ২ জনের অভিষেক হয়েছিল ১ বছরের তফাতে। বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা। তাঁদের প্রতিভা নিয়ে শুরু থেকেই ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মনে সংশয় ছিল না। ২০১৬-য় দাঁড়িয়ে অবশ্য অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটারই মেনে নিচ্ছেন, মানসিকতায় সামান্য ফারাক থাকার জন্যই ‘কমপ্লিট ক্রিকেটার’ হিসাবে রোহিতকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন বিরাট।
২০০৭ সালে ভারতের হয়ে অভিষেক হয় কোহলির। অনেকেই বলেন, দিল্লিতে বেড়ে উঠলেও বিরাটের ব্যাটিং স্টাইল সচিন তেন্ডুলকরের অবসরের দুঃখ কিছুটা হলেও ভুলিয়ে দেয়। ২৮ বছর বয়সেই বিরাটের ওডিআই সেঞ্চুরির সংখ্যা তাঁর বয়সকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে। বিরাট যেখানে ২৫টি শতরানের মালিক, সেখানে ১০টি শতরান করে সমবয়সি রোহিত অনেকটাই পিছিয়ে।
তা সত্ত্বেও ওডিআই বা টি-২০-তে রোহিতের রেকর্ড ঈর্ষণীয়। বিরাটের বছরখানেক পরে টিম ইন্ডিয়ায় অভিষেক হয় রোহিতের। একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ স্কোর ২৬৪-র সঙ্গে আরও ১টি দ্বিশতরান রয়েছে রোহিতের ঝুলিতে। আর একটা বিষয়েও অবশ্য রোহিতকে পিছনে ফেলেছেন বিরাট। ওডিআই, টি-২০-র মতো টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবাহিকতা দেখানোর বিষয়ে বিরাট অনেকটাই এগিয়ে। ২০১১-য় টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকের পরে একমাত্র ইংল্যান্ড ছাড়া বিদেশের মাটিতেও টেস্ট ক্রিকেটে দাপট দেখিয়েছে বিরাটের ব্যাট।
পারফরম্যান্স, আগ্রাসন, দলের উপরে নিয়ন্ত্রণ— সব দিক থেকেই অধিনায়ক বিরাটের হাতে ভারতীয় টেস্ট দল আগামী কয়েক বছরের জন্য নিরাপদ বলে মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। ১১টি শতরানের মালিক বিরাট একদিনের মতো টেস্ট ক্রিকেটেও ভবিষ্যতে অনেক রেকর্ড ভেঙে দেবেন, তা নিয়ে ক্রিকেট-বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্বিমত নেই। অন্যদিকে, প্রতিভায় খামতি না থাকলেও অভিষেকের ৩ বছর পরে টেস্ট দলে নিজের জায়গা পাকা করতে পারলেন না রোহিত। কারণ, ধারাবাহিকতার অভাব। টেস্ট-এ রোহিতের শতরানের সংখ্যা মাত্র ২।
দেশের মাটিতে বা বিদেশে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু ভাল ইনিংস খেললেও পাঁচ দিনের ক্রিকেটে রোহিত নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করেননি বলেই অনেকের অভিযোগ। টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবাহিকতার অভাবের জন্য প্রাক্তন ক্রিকেটাররা রোহিতের মানসিকতাকেই দায়ী করছেন। ধৈর্য্য ধরে ক্রিজে পড়ে না থাকলে টেস্টে বড়ো রান করা কঠিন। প্রাক্তন অধিনায়ক অজিত ওয়াদেকরের মতে, ক্রিকেটের এই প্রাথমিক নিয়ম মেনে ওডিআই বা টি-২০-র তুলনায় টেস্ট ম্যাচে বিরাট নিজের ব্যাটিং স্টাইল সম্পুর্ণ বদলে ফেলেন বিরাট। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাট করতে নেমে ওডিআই বা টি-২০-র মানসিকতার বাইরে বেরোতে পারেননি রোহিত।
একই সঙ্গে বিধি-নিষেধ না থাকায় টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ফিল্ড সাজাতে পারেন বিপক্ষ বোলাররা। ফলে ওডিআই, টি-২০ স্টাইলে ব্যাট করতে গিয়ে স্লিপ, গালিতে বারবার ধরা পড়ে যাচ্ছেন রোহিত। এমনকী, রোহিতের নিজের কোচ দীনেশ লাড স্বীকার করেন, টেস্ট ক্রিকেটে নিজের খেলার স্টাইলে বদল আনতে পারেননি তাঁর ছাত্র। তা সত্ত্বেও ব্যাটসম্যান হিসাবে রোহিতকেও উপরের সারিতেই রাখছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক অজিত ওয়াদেকর।