খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: এক মাস আগেই পরীক্ষামূলক হাইড্রোজেন বোমা ফাটানো। আর সোমবার সকালে শক্তিশালী রকেট উৎক্ষেপণ। উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপে আশঙ্কা বিশ্বজুড়ে। তা হলে কি দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র অর্থাৎ ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল’ বানানোর লক্ষ্যেই আরো এক ধাপ এগোল উত্তর কোরিয়া? নিষেধাজ্ঞা ছিল জাতিসঙ্ঘের। তবুও তাকে তোয়াক্কা না করে আজ মহাকাশে শক্তিশালী রকেট উৎক্ষেপণ করল উত্তর কোরিয়া। তাদের দাবি, উপগ্রহ পাঠানোর জন্যই এই রকেট উৎক্ষেপণ।
যদিও বেশির ভাগ দেশের আশঙ্কা, এর পিছনে রয়েছে দূর দেশে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত ঘেঁষে টংচাং-রি। এটিই উত্তর কোরিয়ার মূল রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, আজ সকালে এখান থেকেই রকেটটি পাঠায় উত্তর কোরিয়া। এ বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের নিয়ে আজই একটি জরুরি বৈঠক ডাকেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গন-হাই। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের কাছেও এ নিয়ে বৈঠক ডাকার জন্য অনুরোধ করেছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর প্ররোচনামূলক ঘটনা। এর ফলে কোরিয়ার উপদ্বীপের নিরাপত্তাই যে শুধু বিঘিœত হল তা নয়, ওই পুরো এলাকা এবং আমেরিকার নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে।’’ যদিও এ সব মানতে নারাজ উত্তর কোরিয়া। তাদের দাবি, মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর জন্য এই রকেট বা এসএলভি উৎক্ষেপণের বার্তা আগেই দেওয়া হয়েছিল। জাতিসঙ্ঘের ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনকে তারা আগেই জানিয়েছিল রবিবার থেকে ১৪ ফেব্র“য়ারির মধ্যে মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর জন্য একটি রকেট উৎক্ষেপণ করবে। সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা নাগাদ সোহে মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উপগ্রহ নিয়ে রওনা দেয় কোয়াংমিয়ংসং রকেটটি। ছাড়ার ৯ মিনিটি ৪৬ সেকেন্ড পর কক্ষপথে প্রবেশ করে উপগ্রহটি।
আর তা নাকি খোদ উত্তর কোরিয়ার ‘একনায়কতন্ত্রী’ নেতা, প্রেসিডেন্ট কিম জং-উনের স্বপ্ন ছিল। উত্তর কোরিয়ার দাবি, তাদের এই মহাকাশ সংক্রান্ত গবেষণা ‘অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ’। ১৯৯৮ সাল থেকেই মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর চেষ্টা করছিল তারা। যদিও সফল হয় ২০১২-তে। অবশ্য ‘শান্তিপূর্ণ মহাকাশ গবেষণার’ তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছে আমেরিকা ও শরিক দেশগুলি। তাদের মতে, এই রকেটের সাহায্যে কোনও দূর দেশে পরমাণু বিস্ফোরণও ঘটাতে পারেন কিম জং। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিম জং-উনের বাবার জন্মদিনের আগেই এ ভাবে ক্ষমতার আস্ফালন দেখাল উত্তর কোরিয়া। বিশ্ব তোলপাড় হোক, তবু ভবিষ্যতে যে আবার এভাবেই ‘উপগ্রহ পাঠাবে’ উত্তর কোরিয়া, তা আজ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে পিয়ংইয়ং।