খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও কমিউনিটি পুলিশিং এর রূপকার একেএম শহীদুল হক বলেছেন, কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে পুলিশ এবং সাধারণ জনগণের মাঝে পারস্পরিক আস্থা ও সর্ম্পকের সেতুবন্ধন তৈরী হচ্ছে। কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে পুলিশ এবং জনগণের মধ্যে সর্ম্পকের দুরত্ব কমছে। আর কমিউনিটি পুলিশিং-এর মাধ্যমে এটি সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি পুলিশ বাহিনী তৈরি করতে চাই, যার জনগণের নিকট জবাবদিহিতা থাকবে। বর্তমান পুলিশের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মাদক এবং জঙ্গীবাদ দমন করা।
জঙ্গিবাদের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। মানুষকে মেরে ইসলাম কায়েম কোন ধর্ম নয়। তিনি আজ মঙ্গলবার রংপুর পুলিশ লাইন্স মাঠে কমিউনিটি পুলিশিং বিভাগীয় সমাবেশ- ২০১৬ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মাদক সমাজে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাদক সরবরাহ বন্ধ করার জন্য পুলিশ কাজ করছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য এলাকার জনগণ এবং কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যরা সবাই মিলে মাদকের কুফল সর্ম্পকে জনগণকে ধারণা প্রদান করতে হবে। আইজিপি বলেন, পেট্রোল বোমা ছুড়ে, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ মারা কোন ধর্মে বলা নেই। ৫ জানুয়ারি ভোট বন্ধের নামে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্কুল কলেজ পুড়িয়ে দেয়া হয়। এই ঘটনা জনগণ দেখেছে কারা এই সব অপকর্ম করেছে। পুলিশ ও প্রশাসন জনগণের সেবক। জনগণকে সেবা দেয়াই তাদের কাজ।
তিনি আরো বলেন, ১৮৬১ সালে পুলিশ বাহিনীকে তৈরি করা হয়। তখন এদেশ ব্রিটিশ ও তৎপরবর্তীতে পাকিস্তান শাসনামল ছিল । তখন পুলিশের ধ্যান- ধারণা ছিল অন্যরকম। মানুষ পুলিশ বাহিনীকে ভয় করতেন। জনগণ এগিয়ে এলে সমাজের যে কোন অপকর্ম দুর করা সম্ভব। কমিউিনিটি পুলিশিংকে মূল্যায়ণ করতে হবে। কারণ, এখানে যারা কাজ করেন- তারা নি:স্বার্থভাবে কাজ করেন। আমরা বলতে চাই যে সমস্ত থানায় ওসি কমিউিনিটি পুলিশিং সদস্যদের মূল্যায়ন করবেন না, তাদের থানায় থাকার কোন অধিকার নেই। এছাড়াও কমিউনিটি পুলিশিং কমিটিতে নারী সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যা ও দিনাজপুরে খ্রিস্টান যাজককে হত্যার চেষ্টাকারিদের জনগণের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জনগণ পুলিশের সাথে থাকলে সমাজের সকল ধরণের অপকর্ম দূর করা সম্ভব। কমিউনিটি পুলিশিং বিভাগীয় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি ( ভারপ্রাপ্ত) হুমায়ুন কবির। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একেএম নুর উন নবী, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু, জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার, কমিউনিটি পুলিশিং এর রংপুর বিভাগীয় কমিটির আহবায়ক আব্দুস ছালাম, সদস্য- সচিব সুশান্ত ভৌমিক, রংপুর জেলা কমিটির আহবায়ক সদরুল আলম দুলু, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। এর আগে আইজিপি একেএম শহীদুল হকের নেতৃত্বে সমাজের সর্বস্তরের হাজার হাজার নাগরিকের অংশগ্রহনে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।