Fri. May 9th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

9kখোলা বাজার২৪, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: পদ ও পদবি থেকে ছিটকে পড়ছেন আওয়ামী লীগের গণবিচ্ছিন্ন ডজনখানেক প্রভাবশালী নেতা। তাদের মধ্যে বেশ ক’জন সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। ২৮ মার্চ অনুষ্ঠেয় কাউন্সিলে এমন পরিবর্তন আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নীতিনির্ধারক।
টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের যেসব নেতা সংগঠন ও কর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন অথবা এখনও আছেন, তাদের প্রেসিডিয়াম ও সম্পাদকম-লী থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে। এমনকি দলটির ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’ হিসেবে পরিচিত উপদেষ্টা পরিষদ থেকেও বিদায় হচ্ছেন বেশ ক’জন।
প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান কমিটির এসব ক্ষমতাধর নেতার কর্মকা-ে অসন্তুষ্ট বলে জানা গেছে। তার কাছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা নেতাদের কর্মকা-ের আমলনামা রয়েছে। এ আমলনামার ভিত্তিতেই তিনি নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। সম্পাদকম-লীতে থাকা দলের মধ্যম সারির নেতাদের কেউ কেউ পদোন্নতির স্বপ্ন দেখলেও তারা নতুন কমিটি থেকেই বাদ পড়তে পারেন- এমন ইঙ্গিত দিয়েছে নীতিনির্ধারণী সূত্র।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই দলটির জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। তখন নবগঠিত কমিটি থেকে বাদ পড়েন প্রভাবশালী নেতা আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আবদুল জলিল, আবদুল মান্নান, সাবের হোসেন চৌধুরী, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, মাহমুদুর রহমান মান্না, মুকুল বোস, আখম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ নেতা। সর্বশেষ ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে বাদ পড়েন তিন প্রেসিডিয়াম সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীর, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আবুল হোসেন প্রমুখ নেতা।
সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার- ‘রূপকল্প ২০২১’ বাস্তবায়নের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা খুবই দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন। এটি বাস্তবায়নে বাধার সৃষ্টি হয়েছে অথবা হচ্ছে- এমন বিষয়ে কোনো ছাড় দিচ্ছেন না শেখ হাসিনা। তিনি নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সর্বো”চ চেষ্টা রয়েছে তার। ইতিমধ্যে নির্বাচনী ইশতেহারের বেশির ভাগ প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়েছে বলে ক্ষমতাসীন দল মনে করে। তাই সরকারের বাকি তিন বছরে অবশিষ্ট প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংগঠনকে সহায়ক হিসেবে গড়ে তুলতে আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। এতে দলের জন্য নিবেদিত, ত্যাগী ও দুর্নীতিমুক্ত এমন নেতাদের নতুন কমিটিতে স্থান দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম স্বীকার করেন, নতুন কমিটিতে পরিবর্তন আসবে। নেতা নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল, গণতান্ত্রিক চর্চা বঙ্গবন্ধুর আমল থেকেই হয়ে আসছে। তবে নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষমতা অতীতে কাউন্সিলররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলের সভানেত্রীর ওপর অর্পণ করেছেন। এবারও সেটাই হতে পারে।
দলের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নেত্রীর (প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা) কাছে সব নেতার এসিআর (বার্ষিক গোপন প্রতিবেদন) রয়েছে। তিনি রাজধানী থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সব নেতার নাম জানেন। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া- সব নেতাকর্মীর খবর তার কাছে রয়েছে। তাই বরাবরের মতোই নেতা নির্বাচনে তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।
গণভবনসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্য থেকে কমপক্ষে দু’জনের ঝরে পড়ার আশংকা রয়েছে। সতীষ চন্দ্র রায় ও নুহ-উল-আলম লেনিন এ তালিকায় রয়েছেন। তাদের বেশ কিছু কর্মকা-ে অসন্তুষ্ট আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড।
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এখন পর্যন্ত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পরিবর্তনের ব্যাপারে কোনো আলোচনা শোনা যায়নি। তবে আওয়ামী লীগের ত্যাগী এবং সক্রিয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মোহাম্মদ নাসিম, ওবায়দুল কাদের এবং মাহবুবউল আলম হানিফকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পাওয়ার বিষয়ে বেশ আগ্রহ রয়েছে। যদিও এ তিন নেতাই জানিয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নন।
অবশ্য ১৪ দলকে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য মোহাম্মদ নাসিমের ইতিবাচক ভূমিকা দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছে। জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম যতটা না উত্তরাধিকার সূত্রে, তার চেয়েও বেশি নিজের দক্ষতা, চেষ্টা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে এ পর্যায়ে এসেছেন বলে নেতাকর্মীরা মনে করেন।
দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বর্তমান সরকার এবং আওয়ামী লীগের কর্মকা-ে সমানভাবে ভূমিকা রাখছেন বলে দলটির নেতাকর্মীদের ধারণা। উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দলের কৌশল নির্ধারণ এবং দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। থেমে নেই মন্ত্রণালয়ের কাজও। ছুটে বেড়াচ্ছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। নিজ চোখে দেখছেন উন্নয়ন কাজ। কথা বলছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তাই তাকে নিয়ে আলোচনা রয়েছে সব মহলেই।
তৃণমূল থেকে উঠে আসা মাহবুবউল আলম হানিফ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী থাকার সময় থেকে সারা দেশের নেতাকর্মীদের আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠেন তিনি। এখনও সে ধারা অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নিষ্ক্রিয় এবং তার দেখা না পাওয়ায় মাহবুবউল আলম হানিফের কাছে নেতাকর্মীরা ছুটে গেছেন। বছরের পর বছর ঝুলে থাকা অধিকাংশ জেলার সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। সারা দেশে ছুটে বেড়িয়ে নির্বিঘেœ এসব সম্মেলন সম্পন্ন করার জন্য দলের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ কর্মীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তবে এ তিন নেতার বিষয়ে কর্মীদের মাঝে ইতিবাচক আলোচনা হলেও বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবিধারী অনেকের বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিরক্ত অনেকের ওপর।
ডা. দীপু মনি, ড. আবদুর রাজ্জাক, ড. মাহমুদ হাছান, ফারুক খান, সৈয়দ আবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে পেয়ে সবাইকে চমকে দেন। এরা প্রত্যেকেই ওই আমলে প্রবল প্রতাপশালী মন্ত্রী ছিলেন। তাদের আচার-আচরণ এবং ব্যবহারেও তার প্রকাশ দেখা গেছে। গণভবনের ব্যাঙ্কুয়েট হলে এক অনুষ্ঠানে এই মন্ত্রীদের একজন মঞ্চে বসতে না পেরে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে দুর্ব্যবহার করেছেন- এমন ঘটনাও প্রত্যক্ষ করেছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। আরেকজন মন্ত্রী তার দফতরে বেছে বেছে জামায়াত-শিবিরের লোকজনকে নিয়োগ দেয়ার পাশাপাশি বিদেশ ভ্রমণে ব্যস্ত ছিলেন বলে ব্যাপক সমালোচনা হয়। তার নিজ নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা মামলা-হামলার মধ্যে ছিলেন। একজন মন্ত্রী চাল ও গম ক্রয়ে কমিশন গ্রহণ এবং নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িয়ে ব্যাপক সমালোচিত ছিলেন। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির বিতর্কে জড়িয়ে বিদায় নিতে হয় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে। একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রী তার মন্ত্রীর পরিবর্তে নিজেকে প্রবল ক্ষমতাধর হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। সিটি কর্পোরেশনে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, জমি দখলসহ সব ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে তার নাম আলোচনায় আসে। অবশেষে মন্ত্রিসভা থেকে বিদায় নিতে হয় অন্যদের মতো তাকেও।
ডা. দীপু মনি, ড. আবদুর রাজ্জাক, ড. মাহমুদ হাছান, ফারুক খান ও জাহাঙ্গীর কবির নানকের বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে ছিটকে পড়ায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তারা প্রত্যেকেই নতুন করে ফেরার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু সর্বশেষ মন্ত্রিসভার পুনর্গঠন হলেও তাদের ঠাঁই হয়নি। এর পরিবর্তে ড. আবদুর রাজ্জাক ও ফারুক খানকে বিগত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। ওই সময় দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে। পরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দুই অংশের কমিটি চূড়ান্ত করে প্রস্তাব দেয়ার জন্য দায়িত্ব দেয়া হলে সেখানে একজনের বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। এই নেতা মন্ত্রী থাকার সময় ক্রয় ও নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িয়ে বিতর্কিত হন। এদের বিষয়ে সব অভিযোগের তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে রয়েছে। এদের কেউ কেউ পদোন্নতির স্বপ্ন দেখলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ভাগ্য বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে। মন্ত্রী থাকার সময় দল ও নেতাকর্মীদের থেকে দূরে থাকার অভিযোগের বিষয়ও খতিয়ে দেখছে আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড।
আওয়ামী লীগের সাত সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে দু-তিনজন ছাড়া বাকিদের কর্মকা-ে সন্তুষ্ট নন দলটির হাইকমান্ড। জেলা ও থানা কমিটি থেকে ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে হাইব্রিডদের ঠাঁই দেয়ার অভিযোগও রয়েছে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। প্রভাবিত হয়ে কমিটি গঠন ও পৌর মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে সমালোচনা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশে সহায়তার জন্য দায়ী করা হয় এদের।
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সম্পাদকম-লীতে থাকা বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে গণবিচ্ছিন্নতার অভিযোগ রয়েছে। সম্পাদকম-লীতে থাকা নেতাদের মধ্য থেকে ১০-১২ জনকে এবার বিদায় দেয়ার আশংকা রয়েছে। সাধারণ সম্পাদকের দুই সহকারী ছাড়াও ৪ সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক চার মন্ত্রী বেকায়দায় রয়েছেন। এর বাইরে বাদ পড়ার তালিকায় রয়েছেন উত্তরাঞ্চল থেকে নির্বাচিত এক সংসদ সদস্য। যিনি এক সময় প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। তিনি বর্তমান কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এছাড়া দফতর সম্পাদক আবদুল মান্নান খান, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল, বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সাত্তার, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ড. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাব্লিউসহ বেশ ক’জন হাইকমান্ডের ‘গুডবুকে’ নেই। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা এবং দলীয় কর্মকান্ডে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।