Mon. May 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

48খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার সব খাতে গ্যাস ব্যবহারে দক্ষতা বৃদ্ধিসহ এর অপচয় রোধকল্পে এবং গ্যাসের মওজুদ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য মো. মনিরুল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদন, সার উৎপাদন, শিল্প, বাণিজ্যিক, সিএনজি এবং গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। দেশের বাণিজ্যিক জ্বালানির সিংহভাগ চাহিদা প্রাকৃতিক গ্যাস পূরণ করে থাকে।
তিনি বলেন, সরকার বিদ্যুৎ খাতে জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত করতে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সময় স্বল্প ক্ষমতার সিঙ্গে সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ না করে কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে। এটি সিঙ্গেল সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি দক্ষতা যেখানে শতকরা ৩১-৩৫ ভাগ সেখানে বৃহৎ কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি দক্ষতা শতকরা ৫০ ভাগ বা তারও বেশি। এতে একদিকে জ্বালানির সাশ্রয় হবে। অন্যদিকে ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কম হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অদক্ষ ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানা বন্ধ করে দিয়ে সেখানে আধুনিক শাহজালাল সার কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। সীমিত গ্যাস সম্পদের মধ্যে যে সব সার কারখানা অধিক সাশ্রয়ী সেগুলোতে গ্যাস ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদান করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গ্যাস অপচয় রোধে শিল্প গ্রাহকদের ইভিসি মিটার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া শিল্প খাতে বয়লারে জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য গ্রাহকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে ক্যাপটিভ পাওয়ার খাতে জ্বালানি ব্যবহারে দক্ষতা কমপক্ষে শতকরা ৬০ ভাগ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কো-জেনারেশন ইভি ট্রি-জেনারেশনের মাধ্যমে জ্বালানি দক্ষতা উন্নয়ন সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবাসিক খাতে গ্যাসের অপচয় রোধকল্পে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় তিতাস গ্যাস টিএন্ডটি কোং লিঃ (টিজিটিডিসিএল)-এর মাধ্যমে মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া এলাকায় ৪ হাজার ৫শ’টি আবাসিক প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। তিতাস গ্যাসের আওতাধীন এলাকায় এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ৮ হাজার ৬শ’টি আবাসিক প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম এলাকায় ৬০ হাজার প্রি-পেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাস অধিক উৎপাদনশীল খাতে ব্যবহার করার উদ্দেশ্য আবাসিক খাতে ও পরিবহন খাতে এলপিজির ব্যাপক ব্যবহার চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েচে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত সাত বছরে গ্যাসের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেলেও চাহিদা অধিক হারে বাড়তে থাকায় সরবরাহের তুলনায় ঘাটতি এখনও প্রায় দৈনিক ৫শ’ মিলিয়ন ঘনফুট। এ ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে ৫শ’ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে ২০২১ সালের মধ্যে ৫৩টি অনুসন্ধান কূপ খনন, ৩৫টি উন্নয়ন কূপ খনন এবং ২০টি কূপের ওয়ার্কওভার করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ সকল কূপ থেকে আনুমানিক দৈনিক ৯৪৩ থেকে ১ হাজার ১০৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে আশা করা যায়। তিনি বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সামুদ্রিক সীমা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় বর্তমানে গভীর এবং অগভীর সমুদে অনুসন্ধান উপযোগী ব্লকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অঞ্চলের অনুসন্ধান তৎপরতা বৃদ্ধির জন্য আরও ব্লক ইজারা প্রদানের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য রিডারদের আকর্ষণ করার জন্য সমুদ্রাঞ্চলে নন-এক্সক্লুসিভ মালটিক্লায়েন্ট ২-ডি সাইসমিক সার্ভে সম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।