খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: একটা সময় ছিল যখন মানুষ টাকা জমা রাখত সিন্দুকে। কিন্তু যুগের সাথে তাল রেখে আধুনিকতার ছোয়ায় সৃষ্টি হয় ব্যাংক। ব্যাংক হল এমন এক প্রতিষ্ঠান যা আমানত হিসেবে মানুষের টাকা পয়সা ও অন্যান্য জিনিস জমা রাখে। আবার সেই টাকা লোন হিসেবে প্রদান করা হয় গ্রাহককে। সেখান থেকে যে ইন্টারেস্ট আসে তা থেকেই চলে মূলত ব্যাংক। কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে ভূয়া নাম ঠিকানা আর সম্পত্তি দেখিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অনেক প্রতারক ব্যাক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান। আমাদের আজকের প্রতিবেদন কিভাবে ভূয়া নাম ঠিকানা দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কিছু চতুর ব্যাক্তি। প্রতিবেদনটি ইনভেস্টিগেশন ৩৬০ থেকে নেয়া।
২৭০ কোটি টাকা
ইনভেস্টিগেশন টিম আনারুজ্জামান নামে একজন ব্যাক্তিকে খোজার জন্য তার ভোটার আইডি কার্ডে দেয়া নাম ও ঠিকানা ধরে যায় জামালপুর জেলা সবশেষ উপজেলা বকসিগঞ্জের কামালপুর ইউনিয়নে। কিন্তু মজার বিষয় হল সেখানে গিয়ে আনারুজ্জামান নামে কাউকে খুজে পাওয়া গেল না। এমনকি ভোটার তালিকায়ও তার নাম পাওয়া গেল না । এখন আপনাদের প্রশ্ন জাগতে পারে কেন আমরা আনারুজ্জামানকে খুজছি। এই আনারুজ্জামান হল সেই ব্যক্তি যিনি আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়ে গেছেন। অস্তিত্বহীন এই আনারুজ্জামান সেই আলাদিনের চেরাগের কেরামতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এক সময়ের লাভজনক প্রতিষ্ঠান বেসিক ব্যাংক থেকে ৬০ কোটি টাকাই তুলে নিয়ে গেছেন । যাকে গরুখোজা খুজেও ইনভেস্টিগেশন টিম খুজে পেল না সেই আস্তিত্বহীন ব্যাক্তি কীভাবে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিলেন?
আমারা যে আনারুজ্জামানকে খুজছিলাম সে মাটেক্স প্রতিষ্ঠানের নামে ২০১২ সালের ১৬ ই এপ্রিল বেসিক ব্যাংক এর গুলশান শাখায় একটি চলতি হিসাব খোলেন। হিসাব খোলার একদিন পরেই ব্যাংক এর কাছে চেয়ে বসেন ৬০ কোটি টাকার লোন। একসময় পেয়েও যান পুরো টাকাটাই । ব্যাংকে জমা দেয়া জাতীয় পরিচয়পত্রে আনারুজ্জামান যে স্থায়ী ঠিকানা লিখেছেন সেই ঠিকানা ছিল জামালপুরের উপজেলা কামালপুর। যেখানে আমরা তার কোন অস্তিত্ব পাইনি। ট্রেড লাইসেন্স উল্লেখিত ঠিকানা উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাড়িতে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায় সেটি একটি আবাসিক ভবন। আবাসিক ভবনের সাধারনত সিটি কর্পোরেশন ট্রেড লাইসেন্স দেয় না। সেখানের আশেপাশের ব্যাক্তিরা জানান আনারুজ্জামান নামে এখানে কেউ থাকে না। অর্থাৎ ভূয়া প্রতিষ্ঠান জেনেও তাকে ৬০ কোটিটাকা লোন দিয়ে দেয় বেসিক ব্যাংক এর গুলশান শাখা।