Fri. Jun 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

1nbখোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত থাকতে হবে। এতে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হবে এবং অনেক দল অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। মানুষও তাদের নিজেদের পছন্দের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাইয়ের সর্বোচ্চ সুযোগ পাবেন।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ক প্রতিনিধিদল বা ডিএসএএসের চেয়ারপারসন জিন ল্যাম্বার্ট এ কথা বলেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদু সেখানে উপস্থিত ছিলেন। জিন ল্যাম্বার্টের নেতৃত্বে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের চার সদস্যের প্রতিনিধি গত ১০ ফেব্র“য়ারি থেকে তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে আসে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা জানতে চান, ভোটের কত আগে নির্বাচনের প্রক্রিয়া ঠিক করা উচিত? উত্তরে ল্যাম্বার্ট বলেন, ‘ইউরোপীয় পার্লামেন্ট কিংবা অন্য কেউ নয় আপনাদেরই সিদ্ধান্তটা নিতে হবে। তাই সময়টা কী হবে সেটি নিয়ে সংসদে আলোচনা হতে পারে, নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয় এ নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করতে পারে।’ প্রতিনিধি দলের চেয়ারপারসন বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় আগামী নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কথা হয়েছে। কেননা এতে জনগণ আশ্বস্ত হবে যে, তাদের ভোটের মূল্য আছে এবং তাদের ওপর নির্বাচনের ফলাফল নির্ভর করবে। তিনি বলেন, আলোচনায় কেউ কেউ একটি সরকারের মেয়াদ শেষে নতুন আরেকটি সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগে অন্তর্র্বতীকালীন সময়ে কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে এটি নিয়ে কথা বলেছেন। তবে বিস্তারিত কথা হয়নি। তবে নির্বাচনের বেশ আগেই এ বিষয়টির সুরাহা হতে হবে। নির্বাচনের দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে এটি চূড়ান্ত করা সমীচীন হবে না। যত আগে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে, ততই মঙ্গল। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনকালীন সরকারের প্রক্রিয়ার প্রসঙ্গটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় হয়নি।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রতিনিধি দল মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তারা ব্লগার হত্যার বিস্তারিত তদন্ত এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করারও তাগিদ দিয়েছে । বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জিন ল্যাম্বার্ট বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে স্বাধীন গণমাধ্যম জরুরি। এখানে কয়েকটি পত্রিকার সম্পাদকের ক্ষেত্রে যা ঘটছে তা নিয়ে উদ্বেগ আছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে কিছু বলতে চাই না। এ ধরনের ঘটনা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, ইতালি যেখানেই হোক না কেনো ইউরোপীয় পার্লামেন্ট উদ্বেগ জানিয়ে থাকে। তবে গণমাধ্যমে সমালোচনার মুখোমুখি হতে রাজনীতিবিদরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। কিন্তু রাজনীতিতে থাকার কারণে এই মূল্যটা দিতে হয়।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের উদ্বেগের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় তুলেছেন কী না জানতে চাইলে প্রতিনিধি দলের প্রধান নেতিবাচক উত্তর দেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিনিধি দলের ৩০ মিনিটের আলোচনায় ব্লগার হত্যা, বাণিজ্য এবং সহিংস উগ্রবাদ নিয়ে কথা হয়েছে। তবে সম্পাদকদের বিষয়ে কথা হয়নি। সম্পাদকদের বিষয়টি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের আলোচনায় এসেছে।
তিন দিনের এ সফরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলটি প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও জাতীয় সংসদের স্পিকার, বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন, তৈরি পোশাক শিল্পের নেতা, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন।