খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ :বিশিষ্ট সমাজচিন্তক কবি ফরহাদ মজহার দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তির ব্যাপারে মাননীয় প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তিনি বলেন, দেশের সকল জনগণ, নাগরিক গোষ্ঠী, সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছে আমার আবেদন, আপনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে মাহমুদুর রহমান যাতে ন্যায়বিচার পান সে ব্যবস্থা করুন। আজ বিচার বিভাগকে যে বিপর্যস্থ করা হচ্ছে সেই আশংকার কথা অনেক আগেই মাহমুুদুর রহমান বলেছিলেন। তার প্রতি আগে অনেক অন্যায় ও অবিচার করা হয়েছে। তাই আজ সময় এসেছে সুবিচারের মাধ্যমে তার প্রায়শ্চিত্ত করা।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মাহমুদুর রহমানের মু্িক্তর দাবিতে দৈনিক আমার দেশ পরিবার আয়োজিত এক প্রতিবাদী মানববন্ধনে তিনি এ আহ্বান জানান। পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদের সভাপতিত্বে ও ইউনিট প্রধান বাছির জামালের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব এম. আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, আমার দেশ বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (এ্যাব) যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু, দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সহকারি সম্পাদক আবদুল আওয়াল ঠাকুর, সাংবাদিক নেতা শাহীন হাসনাত, সাখাওয়াত ইবনে মইন চৌধুরী প্রমূখ।
মানববন্ধনে কবি ফরহাদ মজহার বলেন, সব মামলায় জামিন হওয়া সত্ত্বেও মাহমুদুর রহমানকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না-এটা আমরা মেনে নিতে পারছি না। মাহমুদুর রহমান এ দেশের একজন চিন্তা ও বিবেকের সৈনিক। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতার ইতিহাসে মাহমুুদুর রহমান গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন এদেশের প্রতিটি মানুষের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা থাকতে হবে। গণমাধ্যমকে একমুখি হলে চলবে না। মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, বিচারালয়ে সাম্প্রতিককালে যে বিপর্যস্ত অবস্থা আমরা লক্ষ্য করছি, আফ্রিকার জঙ্গলেও তার নজির নেই। একজন বিচারপতি বিচারালয়ে থাকা অবস্থায় এবং অবসরে গিয়ে যে সব কর্মকান্ড করছেন, তা সমগ্র বিচার ব্যবস্থার জন্য হুমকি। এই বিচারপতি সম্পর্কে মাহমুদুর রহমান আগেই স্পষ্ট উচ্চারণ করেছিলেন যে, তিনি দুর্নীতিবাজ ও দুর্বৃত্তায়ণের সঙ্গে জড়িত। আজও তিনি আইন, বিধিবিধান, বিচার আদালতের অবমাননা করে চলেছেন। দেশের সচেবতন জনগণ আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবীরাই শুধু নয়, সাবেক প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত তাকে উন্মাদ বলছেন।
রুহুল আমিন গাজী সব মামলায় জামিন ও জামিননামা কারাগারে পৌঁছা সত্ত্বেও দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুুদর রহমানকে মুক্তি না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান সরকারের প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সীমাহীন জুলুমের শিকার। বিনা অপরাধে জেলে বন্দি থাকার আজ তার ১০৩৮ দিন অর্থাৎ প্রায় ৩ বছর হয়ে গেছে। উচ্চ আদালত থেকে তার সবগুলো মামলার জামিন হয়েছে এবং কোর্ট থেকে বেইলবন্ড বা জামিননামাও যথারীতি কারাগারে পৌঁছেছে। কিন্তু তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। এতে আমরা হতাশ হয়েছি। আমরা আশাকরি বিজ্ঞ আদালত আদেশ দিয়ে দ্রুত তাকে মুক্তির ব্যবস্থা করবে।
মানববন্ধনে অন্যান্য বক্তারাও মাহমুদুর রহমানের দ্রুত মুক্তি দাবি করে বলেন, সত্য লেখার অপরাধে আজ প্রায় তিন বছর ধরে একজন সম্পাদককে জেলবন্দি করে রাখা হয়েছে যার নজির নেই। আমরা আশা করব আর কালক্ষেপন না করে ন্যায়বিচারের স্বার্থে মাহমুদুর রহমানকে অবিলম্বে মু্িক্ত দেয়া হবে। তার বিরুদ্ধে ৭০টি মামলাই জামিন হয়ে গেছে। রাষ্ট্রের এটর্নী জেনারেল তার মুক্তির পথে আর যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ান, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।