খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : আজ শনিবার সকালে রাজধানীর আরামবাগে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে সংবিধানপ্রণেতা ও সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘’পুলিশকে দলীয়ভাবে অপব্যবহার করা যাবে না। পুলিশ কোনো দলের বাহিনী হতে পারে না।’’ তিনি বলেন, ‘’আজকে পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পুলিশ তো আমাদের এই দেশেরই ছেলে। তারা কেন মানসিকভাবে রুগ্ন হবে? তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তার অর্থ এটা সত্য।’’
এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘’পুলিশ আমাদের শত্রু না। তারা যেভাবে রুগ্ন হচ্ছে, সেই রোগ থেকে তাদের মুক্ত করতে হবে। পুলিশ চাই, আইনের শাসনের জন্যই পুলিশ চাই। কিন্তু সেই পুলিশ এইভাবে মানুষকে ধরে বলবে- এটা আমার দাবি, এটা মানতে হবে এটা চাই না।’’
তিনি বলেন, ‘’পুলিশ অপরাধ করে হাতেনাতে ধরা পড়ছে। এটা কিসের আলামত? রোগের আলামত। যদি বলি, পুলিশের দরকার নেই। এটা একদম না। পুলিশকে রোগমুক্ত কর। প্রশাসনকে রোগমুক্ত কর, দুর্নীতিমুক্ত কর। বিচার বিভাগকে স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা রাখতে হবে।’’
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘’সংবিধানে বলা আছে, জনগণ ক্ষমতার মালিক। মালিককে মালিকের ভূমিকা রাখতে হবে। এই ভূমিকা রাখতে অনেক সময় কিছুটা ঝুঁকিও নিতে হয়।’’ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘’মানুষ শান্তি চায়, স্থিতিশীলতা চায়, সুশাসন চায়, আইনের শাসন চায়। স্বাধীন দেশে দলীয় সরকার, দলীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করবে- এটা কিন্তু সংবিধানপরিপন্থী। দলীয় সরকার থাকবে, কিন্তু তাতে সংবিধান মেনে ক্ষমতা পালন করতে হবে।’’
এ সময় ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘’জঙ্গিবাদ কোনো ধর্মের শিক্ষা হতে পারে না। যারা এগুলো করে, তারা অসুস্থ। তাদের সুস্থ করার দায়িত্ব আমাদের।’’ দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘’চাঁদাবাজির জন্য রাজনীতি, দখল করার জন্য রাজনীতি কোনো রাজনীতি নয়। এটা হলো রুগ্ন রাজনীতি। মানে এটা একটা গুরুতর রোগ, এতে কারও দ্বিমত থাকতে পারে না। নানা সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে- এটাই এখনকার রাজনীতি। এটা না করলে তো রাজনীতি হয় না। ঠিক আছে করেন। কিন্তু গণফোরাম সেই রাজনীতি মরে গেলেও করবে না। আপনারা সবাই আমাকে ছেড়ে গেলেও বলব না, আপনারা রুগ্ন রাজনীতি করেন।’’
বর্ধিত সভায় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীনসহ দলটির কেন্দ্রীয় ও জেলা থেকে আসা নেতারা অংশ নেন। বর্ধিত সভায় গণফোরামকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে আগামী দিনের করণীয় বিষয়ে নেতারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।