খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: সিরিয়ায় তুরস্ক সীমান্তবর্তী বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত শহরগুলোতে তিনটি হাসপাতাল ও একটি স্কুলে নতুন করে বিমান হামলায় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় অধিবাসী ও চিকিৎসা কর্মীরা।
তারা জানান, সোমবার আজাজ শহরের কেন্দ্রস্থলের হাসপাতাল এবং এর কাছেই অবস্থিত স্কুলে অন্তত পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। সেখানে ১৪ জন নিহত হন।
সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর অভিযান থেকে পালিয়ে ওই স্কুলটিতেই আশ্রয় নিয়েছে শরণার্থীরা।
এলাকার আরেক অধিবাসী জানান, শহরটির দক্ষিণে আরেকটি শরণার্থী আশ্রয়শিবির ও ট্রাকের বহরে বিমান থেকে বোমা ফেলা হয়। রাশিয়ার জঙ্গি বিমান এ বোমাবর্ষণ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তুরস্ক সীমান্তে এ শহরটিই বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটি। সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং মিলিশিয়াদের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াইয়ের কারণে গ্রাম ও শহরগুলো থেকে পালিয়ে মানুষজন এ শহরেই জড়ো হয়েছে।
“হাসপাতালের শিশুরা চিৎকার করছে। আমরা তাদের হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছি”, বলেন এক চিকিৎসাকর্মী।
হাসপাতালের কর্মী ও রোগী মিলিয়ে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন; অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত আরও মানুষকে চিকিৎসার জন্য তুরস্কে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ফরাসি স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসা সংস্থা ‘মিতস সঁ ফ্রঁতিয়ে’ এক বিবৃতিতে বলেছে, হাসপাতালে চারটি রকেট হামলার পর আটজন কর্মীকে খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, শহরের উত্তর প্রান্তে মারাত নুমান এলাকায় ন্যাশনাল হাসপাতালে বিমান থেকে বোমা হামলায় দুই সেবিকার মৃত্যু হয়েছে।
হামলার জন্য আসলেই কারা দায়ী তা স্পষ্ট না হলেও তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী আহমেত দাভুতগলু রাশিয়াকেই দায়ী করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
আজাজ শহরের বিভিন্ন ভবনের ওপর রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সমর্থনে দেশটিতে বিমান হামলা শুরু করে রাশিয়া। সম্প্রতি বিদ্রোহী ঘাঁটি আলেপ্পোয় সিরিয়ার সেনাবাহিনীর লড়াইয়েও সহায়তা করছে রাশিয়া।
গত সপ্তাহ থেকে তুরস্কও ওই এলাকায় কুর্দি ওয়াইপিজি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। আজাজ শহর লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে তারা।
ওদিকে, সরকারবিরোধী কুর্দি বাহিনী পশ্চিম দিক থেকে শহরটিতে অগ্রসর হচ্ছে এবং বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়ছে। প্রধান সীমান্ত বাব আল সালাম থেকে শহরটির দূরত্ব মাত্র কয়েক কিলোমিটার। সিরিয়ার সেনাবাহিনী শহরটিতে অগ্রসর হচ্ছে দক্ষিণ দিক থেকে।
কুর্দি বাহিনী এবং সিরিয়ার সরকারি বাহিনী উভয়ই তুরস্ক সীমান্তবর্তী ওই এলাকা বিদ্রোহীদের কাছ থেকে দখলে নিতে চাইছে।
বিদ্রোহী যোদ্ধাদের ওপর রাশিয়ার বিমান হামলার কারণে সিরিয়ার সেনারা সহজেই আলেপ্পো অভিমুখে অগ্রসর হতে পারছে। সিরিয়ার সেনারা শহরটি দখলে নিতে পারলে এটি হবে যুদ্ধে এ বাহিনীর সবচেয়ে বড় জয়