খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : সব মহল থেকে দাবি উঠলেও জ্বালানি তেলের দাম যে আপাতত কমছে না, তা স্পষ্ট হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায়।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ধার-দেনা শোধ হলে প্রয়োজনে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হবে, বুধবার সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন তিনি।
ভর্তুকি দিয়ে জ্বালানি তেল বিক্রি করতে গিয়ে বিপিসির ঋণের ১৫-১৬ হাজার কোটি টাকা শোধ করা এখনও বাকি আছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দর বেড়ে ১২২ ডলারে ওঠার পর বাংলাদেশেও দাম বাড়ানো হয়। সেই হারে বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬ টাকা, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এরপর গত দুই বছর ধরে জ্বালানি তেলের দাম পড়তে পড়তে ৪০ ডলারের নিচে নামলেও দাম সমন্বয় করেনি সরকার।
তেলের দাম না কমানোর পক্ষে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) এতদিনের লোকসান তুলে আনার যুক্তি সরকারের পক্ষ থেকে দেখানো হচ্ছে।
বুধবার সংসদে হাজি সেলিমের এক প্রশ্নের উত্তরেও একই প্রসঙ্গ তোলেন সরকার প্রধান হাসিনা।
হাজি সেলিম দাম কমানোর পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছিলেন, তেলের দাম কমানো হলে মানুষ গ্যাস ব্যবহার করবে না। তখন গ্যাস শিল্পে দেওয়া যাবে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যখন বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম অতিরিক্ত ছিল, তখন আমরা সাবসিডি দিয়ে ডিজেল বিক্রি করেছি। তখন তো কেউ বলেননি, আমরাও ডিজেলের দাম বাড়াই।
“এখন পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশন আয় করে লোন শোধ করছে। ৩৮ হাজার কোটি টাকা লোন। ভ্যাট ও শুল্ক বাকি রয়েছে। ১৫-১৬ হাজার কোটি টাকা শোধ করার অপেক্ষায়।”
“ধার-দেনা শোধ করলে প্রয়োজনবোধে দাম কমাব,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সংসদীয় কমিটিতে সম্প্রতি জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ মাসে ১১ হাজার ৭৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা আয় করেছে বিপিসি। এই আয় থেকে ৭ হাজার ১০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা দেনা শোধ এবং ইস্টার্ন রিফাইনারির দুই নম্বর ইউনিটের জমির জন্য খরচ করা হয়েছে।
এসব টাকা শোধের পরও সরকারের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া ২৬ হাজার ৩৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার দায় এখনও বিপিসির রয়েছে বলে সংসদীয় কমিটির গত ৯ ফেব্র“য়ারির ওই বৈঠকে জানানো হয়।
তেলের দাম কমানো যায় কি না, তা বিবেচনা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান রেখেছিল সংসদীয় কমিটি।
ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলোও জ্বালানি তেলের দাম কমানোর আহ্বান জানিয়ে আসছে।