খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: এটিএম বুথে বিশেষ যন্ত্র বসিয়ে কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় ইস্টার্ন ব্যাংকের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশে ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্য থেকে পাঁচজন গ্রাহকের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে দেওয়া হয়।
ইস্টার্ন ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জিয়াউল করিম জানিয়েছেন, তাঁদের ব্যাংকের ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণের টাকা তাঁদের ব্যাংকে হিসেবে জমা করে দেওয়া হয়েছে।
এটিএম বুথে বিশেষ যন্ত্র বসিয়ে কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় ইস্টার্ন ব্যাংকের মোট ২৮ জন গ্রাহকের ১৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়।
ক্ষতিপূরণের টাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা। তিনি বলেন, এ ঘটনার পর এটিএম বুথের নিরাপত্তা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক এক গুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে। জালিয়াতির ঘটনা জানাজানির পরপরই গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষায় তাৎক্ষণিক কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
৬ থেকে ১২ ফেব্র“য়ারির মধ্যে রাজধানীতে ইস্টার্ন, সিটি ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চার বুথে ‘স্কিমিং ডিভাইস’ বসিয়ে কার্ডের তথ্য চুরি ও পরবর্তী সময়ে কার্ড ক্লোন করে গ্রাহকদের অজান্তে টাকা তুলে নেওয়া হয়। তবে তা জানাজানি হয় ১২ ফেব্র“য়ারি। এ ঘটনায় ইউসিবি গত শুক্রবার বনানী থানায় ও সিটি ব্যাংক গত সোমবার পল্লবী থানায় আলাদা দুটি মামলা করে। ইউসিবির মামলাটির তদন্ত করছে ডিবি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এই জালিয়াতির ঘটনায় চারটি ব্যাংকের ৪০ জন গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের হিসাব থেকে প্রায় ২১ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়। এঁদের মধ্যে ইস্টার্ন ব্যাংকের ২৮ জন, সিটি ব্যাংকের ৪ জন, ইউসিবির ৭ জন এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১ জন রয়েছে। ইস্টার্ন, সিটি ও ইউসিবির গুলশান, বনানী ও মিরপুরের কালশী এলাকার মোট চারটি বুথে স্কিমিং ডিভাইস বসানো অবস্থায় ১ হাজার ২০০ কার্ডের লেনদেন হয়। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক এসব কার্ডের তথ্য চুরি হয়েছে বলে ধারণা করছে। এসব কার্ড নিষ্ক্রিয় করতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই মধ্যে সব কটি কার্ড নিষ্ক্রিয় করে তার বিপরীতে বিকল্প কার্ড সরবরাহ করা হয়েছে বলে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এদিকে কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় চার-পাঁচজন বিদেশিকে নজরদারিতে রেখেছে পুলিশ। জালিয়াতির ঘটনায় সিসি ক্যামেরায় পাওয়া ছবি দেখে তাঁদের শনাক্ত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও নবগঠিত কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। তিনি আরও বলেন, শনাক্ত হওয়া বিদেশিরা পূর্ব ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক হতে পারেন। নিশ্চিত হওয়ার পর জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে।