খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি। বেশির ভাগ জায়গায় তৃণমূল থেকে একাধিক প্রার্থীর নাম পাঠানো হয়েছে। প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে একক প্রার্থী রাখা বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
পৌরসভার পর এবার প্রথমবারের মতো দলীয় ভিত্তিতে ইউপির চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। প্রথম ধাপে ৭৩৯টি ইউপিতে আগামী ২২ মার্চ ভোট হবে। প্রথম ধাপের ৭৩৯টি ইউপিতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২২ ফেব্র“য়ারি।
বিএনপির সূত্র জানায়, দলটি ২১ ফেব্র“য়ারির মধ্যেই প্রার্থী মনোনয়নের কাজ শেষ করতে চায়। এবার কেন্দ্র সরাসরি প্রার্থী মনোনয়ন দিচ্ছে না। তৃণমূল থেকে ছয়জনের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। কেন্দ্র তা চূড়ান্ত করবে। ইতিমধ্যে অনেক প্রার্থীর তালিকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে প্রার্থী চূড়ান্ত করার কাজে যুক্ত বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতা প্রথম আলোকে জানান, আজকের মধ্যে তাঁরা ৩০০ প্রার্থী চূড়ান্ত করতে চান। তবে অর্ধেকের বেশি জায়গা থেকে একাধিক প্রার্থীর নাম এসেছে। অনেক জায়গা থেকে এসেছে পাল্টাপাল্টি একাধিক তালিকা। স্থানীয় পর্যায়ে নেতাদের কোন্দলের কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন। একক প্রার্থী রাখতে কেন্দ্র থেকে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের সম্পর্কে কেন্দ্রের সেরকম কোনো ধারণা নেই। কেন্দ্রের যোগাযোগ বা তথ্য পাওয়ার মাধ্যম দলের নেতারা। সেখানে নেতারা আবার বিভক্ত নিজ নিজ অনুসারীদের পক্ষেই তাঁরা কথা বলছেন। তাই অনেক জায়গায় প্রার্থী মনোনয়নে ভুল হতে পারে।
এবার ইউপি নির্বাচনে কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের বিষয়াদি তত্ত্বাবধান করছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় আগ্রহী প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। অনেক জায়গা থেকে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম এসেছে। তৃণমূলের অনেক জায়গা থেকে একক প্রার্থীর নামও এসেছে। যেখানে একাধিক প্রার্থীর নাম এসেছে, সেখানে কেন্দ্র থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় ইতিমধ্যে একক প্রার্থী ঠিক করা সম্ভব হয়েছে। তিনি আশা করেন, শেষ পর্যন্ত খুব একটা জটিলতা থাকবে না।
এবার বিএনপি বলেছিল তৃণমূল থেকে ছয়জনের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনীত করে কেন্দ্রে নাম পাঠাতে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে যাঁরা বিএনপির সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী—এই ছয়জনের সুপারিশে প্রার্থী মনোনীত হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় একাধিক সূত্র জানায়, এই প্রক্রিয়ায় জেলা নেতাদের সরাসরি সম্পৃক্ত না রাখা, উপজেলা ও মাঠপর্যায়ের নেতাদের কোন্দলের কারণে অনেক জায়গা থেকে একাধিক তালিকা পাঠানো হয়েছে। এর পাশাপাশি সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের শেষ পর্যায়ে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করায় পরিস্থিতি আরও কিছুটা জটিল হয়েছে। গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত পৌরসভার মেয়র নির্বাচনেও দেখা গেছে, সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও জেলা নেতাদের দ্বন্দ্বে অনেক জায়গায় বিদ্রোহ হয়েছিল। এবার তা আরও বেশি সংখ্যায় হতে পারে।