Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

9kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর ২০০৪ সালের এশিয়া কাপটাই শুধু খেলতে পারেননি মাশরাফি বিন মুর্তজা। ২০০৮, ২০১০, ২০১২, ২০১৪—চারটি এশিয়া কাপের প্রতিটিতেই খেলেছেন তিনি। প্রতিটি টুর্নামেন্ট খেলেছেন দলের একজন সদস্য হিসেবেই। তবে এবারের এশিয়া কাপটা মাশরাফির কাছে হতে যাচ্ছে অন্য রকম। এই প্রথম তিনি এশিয়া কাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক!
পাকিস্তানে হওয়া ২০০৮ এশিয়া কাপে খেলেছেন মোহাম্মদ আশরাফুলের নেতৃত্বে। সেবার বোলিংয়ে ঠিকমতো নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ৫ ম্যাচে উইকেট পেয়েছিলেন ৪টি। পরেরটিতে খেলেছেন সাকিব আল হাসানের অধীনে। সেবারও পারফরম্যান্স বলার মতো নয়—৩ ম্যাচে উইকেট ২টি।
তবে ২০১২ এশিয়া কাপটা তাঁর কাছে স্মরণীয়ই হয়ে থাকার কথা। চোট কাটিয়ে ১১ মাস পর ওই টুর্নামেন্ট দিয়েই ফিরেছিলেন দলে। বোলিং পারফরম্যান্সও ছিল বলার মতো—৪ ম্যাচে ৬ উইকেট, এশিয়া কাপে তাঁর সেরা সাফল্য। ব্যক্তিগত সাফল্য ছাপিয়ে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ উঠেছিল ফাইনালে। তারপর পাকিস্তানের কাছে ২ রানের সেই অশ্র“ ঝরানো পরাজয়। সাকিব-মুশফিকের কান্না আজও আর্দ্র করে তোলে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মন। দুঃসহ সেই স্মৃতির অংশীদার মাশরাফিও।
গত এশিয়া কাপে আবারও ফিরে আসে তাঁর পুরোনো ‘শত্রু’ চোট। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা খেলেই হঠাৎ পেটের পেশিতে (সাইড স্ট্রেইন) চোট পান। আকস্মিকভাবে এশিয়া কাপ শেষ হয়ে যায় মাশরাফির! অম্লমধুর অভিজ্ঞতার পর মাশরাফির কাছে এবার এশিয়া কাপ আসছে নতুন রূপে। প্রায় ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে চারবার এই টুর্নামেন্ট খেলার পর এই প্রথম অধিনায়ক হিসেবে খেলতে যাচ্ছেন তিনি!
এই প্রথম এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণ হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দিয়ে। ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশের দুর্বলতা পুরোনো। টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংটাও মাশরাফিদের জন্য আনন্দের কারণ নয়। সর্বশেষ র্যাঙ্কিং অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান আফগানিস্তানেরও নিচে। মাশরাফিও বিভিন্ন সময়ে স্বীকার করে নিয়েছেন এই সংস্করণে নিজেদের দুর্বলতার কথা। টি-টোয়েন্টিতে ব্যর্থতার পেছনে এত দিন বড় যুক্তি ছিল পর্যাপ্ত ম্যাচ না খেলা। তবে এখন এই যুক্তি দেখানোর সুযোগ কম। গত চার মাসে আন্তর্জাতিক ও বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগ মিলিয়ে খেলোয়াড়েরা খেলেছেন অনেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। নভেম্বরে বিপিএলের পর জানুয়ারিতে খুলনায় ছিল জিম্বাবুয়ে সিরিজ। সাকিব-মুশফিক খেলে এসেছেন পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি লিগ পিএসএলে। আজ থেকে শুরু অনুশীলনে থাকছে নিজেদের চূড়ান্তভাবে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ।
মাশরাফির অসাধারণ নেতৃত্বে গত দেড় বছরে ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশাল রূপান্তর ঘটেছে বাংলাদেশ দলের। তবে টি-টোয়েন্টিতে সাফল্য এখনো বলার মতো নয়। মাশরাফির নেতৃত্বে ৯ ম্যাচে জয় মাত্র ৪টি। পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি মাত্র ম্যাচের সিরিজ বাদে জেতা হয়নি কোনো সিরিজ। টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের ব্যর্থতা ঘোচানো, ২০১২ এশিয়া কাপ ফাইনালের সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া—মাশরাফির সামনে চ্যালেঞ্জটা তাই অনেক বড়।
বড় চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে মাশরাফি আপাতত প্রতিক্রিয়াহীন। টিম প্রটোকলের বেড়াজালে আবদ্ধ অধিনায়ক মুখে কিছু না বললেও মাঠের পারফরম্যান্স দিয়ে উত্তরটা দিতে চাইবেন নিশ্চয়ই।