Wed. Aug 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

24kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, অমর একুশের অবিনাশী চেতনা স্বাধিকার ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অসীম প্রেরণা ও শক্তি যুগিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মহান ‘শহীদ দিবস’ ও ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ বিশ্বের সকল জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় ঐক্য ও বিজয়ের প্রতীক হয়ে ওঠবে। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অমর একুশে ফেব্র“য়ারি, রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান ‘শহীদ দিবস’। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপিত হচ্ছে।’
এ উপলক্ষে তিনি বাংলাভাষীসহ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী জাতিগোষ্ঠীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সেই সাথে মহান ভাষা আন্দোলনে শহিদদের অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান ভাষা আন্দোলন জাতীয় ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। এ আন্দোলন ছিল মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নিজস্ব জাতিসত্তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার আন্দোলন। তিনি বলেন, অমর একুশের অবিনাশী চেতনা পরবর্তীকালে স্বাধিকার ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অসীম প্রেরণা ও শক্তি যুগিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং তাঁরই নেতৃত্বে দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জাতি অর্জন করে বহু কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা।
তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী ভাষা শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ ভাষার দাবিতে সোচ্চার তৎকালীন গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্তসহ সকল ভাষা সৈনিককে, যাঁদের অসীম ত্যাগ, সাহসিকতা, দক্ষ সাংগঠনিক ক্ষমতা ও ত্বরিত কার্যক্রম গ্রহণের ফলে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্র“য়ারি ভাষা আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। বাঙালি পায় মাতৃভাষার অধিকার। রাষ্ট্রপতি বলেন, মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ বিশ্বে বিরল ঘটনা।
মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে বাঙালি জাতি যে ইতিহাস রচনা করেছিল, শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্ব আজ তাকে স্মরণ করছে সুগভীর শ্রদ্ধায়। ১৯৯৯ সালে কয়েকজন মাতৃভাষাপ্রেমী বাঙালির প্রাথমিক উদ্যোগে এবং সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ ও ঐকান্তিক চেষ্টায় জাতিসংঘ কর্তৃক ২১ ফেব্র“য়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে জাতিসংঘ এ বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘কোয়ালিটি এডুকেশন, ল্যাংগুয়েজ এন্ড লার্নিং আউটকামস’ শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণকালে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা অর্জনের উপর এ প্রতিপাদ্যে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
তিনি মনে করেন নিজস্ব মাতৃভাষার উন্নয়ন ও সংরক্ষণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমরা গর্ববোধ করি এই ভেবে যে, অমর একুশের চেতনা আজ দেশের গ-ি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। আমাদের শহীদ দিবস এখন বিশ্বজুড়ে নিজস্ব স্বকীয়তা রক্ষার চেতনার উৎস। তিনি আরো আশা প্রকাশ করেন, এ চেতনাকে ধারণ করে পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষের সাথে যোগসূত্র স্থাপিত হবে, লুপ্তপ্রায় ভাষাগুলো আপন মহিমায় নিজ নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে উজ্জীবিত হবে এবং গড়ে ওঠবে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির বর্ণাঢ্য বিশ্ব।

অন্যরকম