খোলা বাজার২৪,২১ ফেব্রুয়ারি, রবিবার ২০১৬।। জোটে যদি একটি পয়সা ক্ষুধার লাগি, দুটো যদি জোটে তবে ফুল কিনো হে অনুরাগী” কবিতার চরণ থেকে ফুলের গুরুত্ব বোঝা যায়।
ফুল সবার প্রিয়। এজন্য বসন্তবরণ, ভালোবাসা দিবস, সরস্বতী পূজা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরে রমরমা ব্যবসা করেছেন দেশের ফুল ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবি, শুধু আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে গত তিনদিনে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ কোটি টাকার ফুল কেনাবেচা হয়েছে।
সারাদেশে এর পরিমাণ ২০ কোটি টাকা ছাড়াবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
ফেব্রুয়ারি মাসকে ফুল ব্যবসার মৌসুম বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এ মাসের বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান ঘিরে ফুলের ব্যবহার বাড়ে। তবে এবার অন্য বছরগুলোর চেয়ে ফুলের চাহিদা একটু বেশি বলেই জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকায় চলতি বছর বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠান উদযাপনে মানুষের মধ্যে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে।
বছরের অন্যান্য সময়ে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, নবীনবরণ, স্টেজ সাজানো, গাড়ি-বাড়ি সাজানোসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুল ব্যবহার হয়। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে বিশেষ অনুষ্ঠানগুলো থাকায় ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। আর চাহিদা বাড়লে ফুলের দাম বাড়ে।
শাহবাগের এক ফুল ব্যবসায়ী বলেন, ‘ফুল কিনি বেশি দামে। তবে তেমন বেশি দামে বিক্রি করতে পারি না। অন্য সময় ২৬ ইঞ্চি ফুলের ডালার দাম এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা থাকে। এখন এক হাজার টাকা দাম বললে ক্রেতারা বেশি মনে করছে। আসলে কাঁচামাল কিনতেই ব্যয় হয় বেশি। ৮০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা দামের ফুলের ডালা আছে। তবে এক হাজার টাকা দামের ডালাগুলোই বেশি বিক্রি হয়।’
তবে ফুলের ক্রেতা হামিদুর বলেন, ‘আমি এক সপ্তাহ আগে একটি শ্রদ্ধাঞ্জলির ডালা অর্ডার করেছিলাম ৮০০ টাকায়। এখন এটি এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার ফুলের দাম অনেক বেড়েছে।’
শাহবাগে ফুলের বাজারে রজনীগন্ধা, গাঁদা, জারবেরা, কেলোনজরা, চন্দ্রমল্লিকা, লাল ও সাদা গোলাপ, ভুট্টা, বেলি, কামিনী, সূর্যমুখী, ডায়মন্ড, গরম ফেনিয়া, রতপুসুটি, টুনটুনি, জিপসি, স্টারকলি, ডালিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল বিক্রি হয়। তবে বেশ কয়েকটি ফুল আবার একাধিক রঙের।
বাংলাদেশে সাধারণত সারা বছরই ফুল উৎপাদন হয়। তবে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়কে ফুল উৎপাদনের মৌসুম ধরা হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, সারাদেশেই কমবেশি ফুল উৎপাদন হয়। তবে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ হয় যশোরে। জেলাটির গাঁদা ও সাদা রজনীগন্ধার মান ভালো। সাভারের গোলাপ ভালো হয়। এছাড়া ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও ঢাকার আশপাশের জেলায়ও ফুল চাষ হয়।