খোলা বাজার২৪ মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: বাংলাদেশ দল এখন ভাসছে সেই টি-টোয়েন্টির স্রোতে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার ম্যাচের হোম সিরিজের পর কাল থেকে ঢাকাতেই শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ। এরপর তারা ভারতে যাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে। ২০ ওভারের ক্রিকেটে গা ভাসানোর ঠিক আগ মুহূর্তে বাংলাদেশ দলের প্রতিজ্ঞা—এবার জ্বলে উঠতে হবে টি-টোয়েন্টিতেও।
গতকাল মিরপুরের ইনডোরে অনুশীলন শেষ করে কাল দলের হয়ে সে প্রতিজ্ঞার কথা জানিয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ, ‘আশা করি এবারের এশিয়া কাপে আমরা টি-টোয়েন্টির দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারব। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও আমরা এবার জ্বলে উঠব।’গতকাল অনুশীলনে মাহমুদউল্লাহ ষ
খেলা যত ছোট, ছোট-বড় দলের ব্যবধান তত কম। টেস্টের তুলনায় ওয়ানডেতে অঘটন ঘটে বেশি। আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তো অঘটন শব্দটাই চলে না। এখানে ছোট-বড় দলের ব্যবধান এতই কম যে ‘মশার চাপে হাতির পিষ্ট’ হওয়াটাও স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া যায়।
কিন্তু মাঝখানে বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কী এমন করল যে অমন চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞার কথা শোনাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ! ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সোনালি সময় পার করলেও সব সাফল্যই এসেছে ওয়ানডে ক্রিকেটে। টি-টোয়েন্টিতেও ওয়ানডের মতো দল হয়ে ওঠার আত্মবিশ্বাস তাহলে কোনো সুড়ঙ্গ পথে আসছে? ইনডোরের সামনে সাংবাদিকদের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহর উত্তর শোনার পর অবশ্য বিষয়টা নিয়ে আর কোনো সংশয় থাকল না, ‘দেশের জার্সি গায়ে খেলতে নামলে সব সময়ই আমাদের মধ্যে ওই প্রতিজ্ঞা কাজ করে। গত এশিয়া কাপে ভালো সুযোগ থাকলেও আমরা পারিনি। এবার চাই না সে রকম কিছু হোক। অন্তত কাছাকাছি যেতে চাই, যেন এরপর সেখান থেকে কোনো সুযোগ না হারাই।’
মিরপুরে আগামীকাল বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের মাটিতে শুরু হবে এশিয়া কাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে নিজেদের প্রস্তুতিতে মাহমুদউল্লাহ এতটাই সন্তুষ্ট যে তাঁর চোখ গিয়ে পড়ছে শিরোপায়, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য লড়াই করব। আমাদের দলের জন্য শুরুটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুরুটা ভালো হলেই আমরা সেখান থেকে এগিয়ে যেতে পারব।’ সেই শুরুর প্রতিপক্ষ পরাক্রমশালী ভারত হলেও মাহমুদউল্লাহ চাপের কিছু দেখছেন না, ‘দলের সবাই খুব নির্ভার। ফিটনেস, স্কিল সবকিছু নিয়েই সবাই খুব ভালোভাবে কাজ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত খুব ভালো ক্রিকেট খেললেও আমরা শুধু আমাদেরটা নিয়েই ভাবছি। আমাদের আত্মবিশ্বাসী ক্রিকেট খেলতে হবে।’
টি-টোয়েন্টির দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্যই আত্মবিশ্বাসটা জরুরি মনে করেন মাহমুদউল্লাহ, ‘সবাই বলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমরা ভালো দল নই। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ—নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। স্ট্রাইক রেট আরও ভালো করতে হবে। আগ্রাসী ক্রিকেট খেললে নিজের খেলা ভালো হবে, দলের পারফরম্যান্সও ভালো হবে।’
মাহমুদউল্লাহ নিজেও চেষ্টা করছেন ব্যাটিংয়ে সে আগ্রাসী ভাবটা আনতে। যখনই ব্যাট হাতে নামবেন, চেষ্টা করবেন প্রথম বল থেকে আক্রমণাত্মক থাকতে। দলের বোলারদের জন্যও দেখছেন একই দায়িত্ব, ‘শুধু ব্যাটসম্যান নয়, সবাইকেই টি-টোয়েন্টিতে কৌশলী হতে হয়। পরিস্থিতি বুঝে খেলতে হয়। একটা উইকেট, রান আউট বা ছক্কা পুরো ম্যাচের পরিস্থিতি বদলে দেয়। আমি প্রথম বলেই ছক্কা মারার চেষ্টা করব।’
মাহমুদউল্লাহর কথায় যেন ফুটে উঠল বাংলাদেশ দলেরই আগ্রাসী চেহারাটা।