খোলা বাজার২৪ মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬:
‘আমাদের একুশের চেতনাকে লালন করতে হবে। একুশের চেতনা হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, অন্যায়কে প্রতিরোধ করা এবং অন্যায়ের কাছে মাথা নিচু না করা। এ শিক্ষাই যেন আমরা পরবর্তী আমাদের জীবনে বলবৎ করতে পারি। শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, শান্ত-মারিয়াম একাডেমি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি এবং শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন একটি বড় দায়িত্ব কাধে তুলে নিয়েছে। তারা মননকে লালন করছে। যে মনন মানুষকে পরিচালিত করবে সুন্দরের পথে, যাতে মানুষ অন্যায়কে প্রতিরোধ করে ন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। এবং আমার একান্ত প্রত্যাশা আগামীতেও শান্ত-মারিয়াম এই দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে যাবে।’
ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য সদ্য একুশে পদকপ্রাপ্ত ডা. সাইদ হায়দার গত রোববার মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব আয়োজিত শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
তিনি শিশুদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য আশীর্বাদ জানিয়ে সকলের কাছে একটি অনুরোধ করেন, ‘আপনার সাধারণ কথাবার্তায় সবসময় চেষ্টা করবেন প্রমিত উচ্চারণে কথা বলতে, লেখার সময় যথা সম্ভব শুদ্ধ বানানে লেখার চেষ্টা করবেন। তা হলেই ভাষার জন্য যে লড়াই আমরা করেছি তা সার্থক হবে। সেই সাথে শিশুদের শৈশব থেকেই অভ্যাস করাতে হবে।’
প্রতিবছরের মতো এবারো শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। প্রথম দিন গত ২০ ফেব্রুায়ারি শনিবার রাত ৯-৩০টায় উত্তরা ক্যাম্পাসের ১ নং বিল্ডিং-এ (বাড়ি- ১, রোড-১৪, সেক্টর-১৩, উত্তরা) চলচ্চিত্র অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী (পরিচালক সুভাষ দত্ত) এবং মহান ভাষা আন্দোলনের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র ‘বায়ান্ন’ প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া পরিবেশিত হয় ভাষার গান ও দেশের গান।
একুশের প্রথম প্রহরে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইমামুল কবীর শান্ত উত্তরা ক্যাম্পাসের ১ নং বিল্ডিং-এর সামনের শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, শান্ত-মারিয়াম একাডেমি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন, দৈনিক আজকের প্রত্যাশা, শান্ত-মারিয়াম ক্রিয়েটিভ ডেস্টিনেশনের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ ছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগেও অনেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
গত রোববার সকাল সাড়ে আটটায় ১নং বিল্ডিং-এর সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে (অর্ধনমিত) শুরু হয় দিনের কার্যক্রম। পতাকা উত্তোলন করেন শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কাজী মফিজুর রহমান। পুস্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ও একাডেমির শিক্ষকবৃন্দ, শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন ও এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, শিক্ষার্থীরা, অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকাবাসী। একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরাস্থ বিল্ডিং নং ৫-এ শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন ও সঙ্গীত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে বিচারক হিসেবে ছিলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী অধ্যাপক হাশেম খান, অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী এবং অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরিবেশনায় ছিলেন শান্ত-মারিয়াম একাডেমি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির শিশু-কিশোররা। সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগ ও দুপুর ১২টায় শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি কালচারাল ফোরামের শিল্পীরা দেশের গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ভাষাসৈনিক ডা. সাঈদ হায়দারসহ বিশিষ্টজনেরা। এ পর্যায়ে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইমামুল কবীর শান্ত, শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. মো. আহসানুল কবীর, উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কাজী মফিজুর রহমান, ডা. সাইদ হায়দার, অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক, অধ্যাপক মুশারাত শবনম, প্রক্টর ড. গোলাম মোস্তফা এবং স্থপতি হোসনে আরা রহমান।