খোলা বাজার২৪ বুধবার,২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: বাধা’ উপেক্ষা করে বিএনপির যে সব নেতা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন, এখন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রুহুল কবির রিজভী।মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষ হওয়ার পর দিন বুধবার নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, “ক্ষমতাসীনরা আমাদের প্রার্থীদের প্রস্তাবক ও সমর্থনকারীদের প্রকাশ্যে ধরে নিয়ে সমর্থনপত্রে স্বাক্ষর করেনি- এ মর্মে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিও আদায় করছে।
“তারা বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা, নেতা-কর্মীদের ঘর-বাড়িতে হামলা এবং চেয়ারম্যান প্রার্থীদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারে প্রাণবিনাশী হুমকি অব্যাহতভাবে দিয়ে চলেছে।”
প্রথম পর্যায়ে ৭৩৮টি ইউনিয়নে মঙ্গলবার বিকালে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর দেখা যায়, ৭০টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই।
তার আগে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী মনোনয়নপত্র জমা দিতে বিএনপি নেতাদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ করলেও তা ‘ঢালাও অভিযোগ’ বলে উড়িয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে রিজভী দাবি করেন, ২২ মার্চ অনুষ্ঠেয় ভোটে অংশি নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বিএনপির এমন প্রার্থীর সংখ্যা ৮৩ জন।
“কেবল বাগেরহাট জেলাতেই আমাদের মনোনীত ৩০ প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের কাছে খবর আসছে, অনেক জায়গায় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে।”
নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিকে ‘সংঘাতপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে এর জন্য ইসিকে দায়ী করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী।
“আমরা মনে করি, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হল, এর জন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন। এই কমিশনের জন্য দেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ নাই।”
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল জব্বার মুধা, বাগেরহাটের সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী খান আবিদুর রহমান এবং ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দলের প্রার্থীদের ওপর ‘শাসকদলের তাণ্ডবের’ কথা তুলে ধরেন এই বিএনপি নেতা।
“বর্তমান নির্বাচন কমিশন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের মডেলটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে অনুসরণ করে যাচ্ছে। এই ইউপি নির্বাচনেও যে ভোট ডাকাতিসহ আওয়ামী লীগ ক্যাডার ও পুলিশের যৌথ তাণ্ডব দৃশ্যমান হবে তার সকল আলামত শুরু হয়ে গেছে এখন থেকেই।”
সারাদেশে শিশু হত্যাকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, “গত ১২ মাসে ৩৮০ জনের বেশি শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
“গণতন্ত্রের অনুপস্থিতির কারণে আজ সমাজ ও রাষ্ট্রের মানবিক চেহারা লোপ পাচ্ছে। নিষ্পাপ শিশুরাও এই দুঃশাসনের করাল গ্রাসে চিরনিদ্রায় শায়িত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।”
সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শিরিন সুলতানা, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন।