খোলা বাজার২৪ বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘এক-এগারোর কুশীলবদের’ বিচারে কমিশন গঠনের যে দাবি বিভিন্ন মহল থেকে উঠেছে, সরকার তা ‘ভেবে’ দেখবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ‘সমসাময়িক গণমাধ্যম’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর সঙ্গে সরকারের কোনো ‘বৈরিতা’ নেই। সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইনু বলেন, “বিভিন্ন জায়গা থেকে যে কমিশনের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে, এটা সরকার শুনেছে, সরকার পরে এটা ভেবেচিন্তে দেখবে।”
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত ফখরুদ্দীন আহমেদের সরকার। জরুরি অবস্থা জারি করে দুর্নীতি দমন অভিযানের কথা বলে শীর্ষ রাজনীতিবিদদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন আলোচনায় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম এক প্রশ্নের মুখে বলেন, ২০০৭-৮ সালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এর সরবরাহ করা ‘খবর’ যাছাই না করে ছাপানো ছিল তার সাংবাদিকতা জীবনের ‘বিরাট ভুল’।
এরপর আওয়ামী লীগের সমর্থক ও নেতাকর্মীরা স্টার সম্পাদকের বিরুদ্ধে মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহের কয়েক ডজন মামলা করেছেন দেশের বিভিন্ন জেলার আদালতে। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার মায়ের গ্রেপ্তারের জন্য মাহফুজ আনামকে দায়ী করে তার বিচার দাবি করেছেন।
এক-এগারো পরবর্তী সময়ে মাহফুজ আনামসহ আরেকজন সম্পাদকের ভূমিকা তুলে ধরে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেন, আত্মমর্যাদা থাকলে মাহফুজ আনাম পদত্যাগ করতেন।
এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাহফুজ আনমকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘শতভাগ ঠিক’। “প্রতিহিংসা, রাগ-অনুরাগ বা ক্ষোভ-বিক্ষভের বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রী ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন, অক্ষরে অক্ষরে সত্য কথা বলেছেন।” বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিতে ‘সঠিক চিত্র আসেনি’ বলেও মন্তব্য করেন ইনু।
তিনি বলেন, “তারা বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরেন না। ভিন্ন কোনো পক্ষের হয়ে একচোখা প্রতিবেদন তৈরি করছে। যা আমরা গ্রহণ করতে রাজি নই। কারণ এই তথ্য খণ্ডিত, যেখানে সঠিক চিত্রের প্রকাশ পায়নি।”
সরকার ডেইলি স্টার বা প্রথম আলোর সঙ্গে ‘বৈরি কোনো আচরণ করছে না’ দাবি করে ইনু বলেন, ওই দুটি পত্রিকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা ‘আন্তরিকভাবে নিয়মিত’ অংশ নিচ্ছেন।
এর আগে সংসদেও ‘এক-এগারো’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “মাহফুজ আনামের কথাকে কেন্দ্র করে পুরো বিষয় স্মরণে এসেছে, নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়নি।”
কমিশন গঠন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ৃপঁচাত্তর থেকে বিরাশি- জেনারেল জিয়াউর রহমানের ক্যান্টনমেন্টে কসাইখানা বানানোর ঘটনা, এখানেও কমিশনের ব্যাপার আছে।ৃকমিশন করলে একটি কমিশন হতে পারে, সেটা সরকার বিবেচনা করবে।”
এর ব্যাখায় ইনু বলেন, “পঁচাত্তর থেকে বিভিন্ন সামরিক শাসনকালে যে বিভিন্ন দুস্কর্ম, মানবাধিকতার লঙ্ঘন, নির্যাতন, অত্যাচার-নির্যাতন, দুর্বৃত্তির ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে সামগ্রিক বিবেচনায় শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি রাখে।