Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

40kখোলা বাজার২৪ শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: ধর্ষণ, শ্লীনতাহানি, ইভটিজ়িংয়ের ঘটনাগুলি দেখে এবং খবরেরকাগজে তার ফলাও বর্ণনা পড়ে এটাই মনে হয়, এ পৃথিবীতে নারীর সবচেয়ে বড় শত্রু তারই বিপরীত লিঙ্গ “পুরুষ”। এই ধারণা পোষণ করে অনেক নারীই পুরুষবিদ্বেষী। কোনও পুরুষকেই তাঁরা সহ্য করতে পারেন না। তবে সত্যি বলতে কী, শত্রুতা বিষয়টি লিঙ্গগত নয়। নারী পুরুষের চির শত্রু, পুরুষ-পুরুষ কিংবা নারী-নারী চিরমিত্র, বিষয়টি ঠিক তেমন নয়। বিষয়টি মনুষ্যগত। সেই নিয়মকে ধরেই বলা যায়, একজন নারীও আরেক নারীর শত্রু হতে পারে। এক নারীও অন্য নারীর চরম ক্ষতি করতে পারে। কীভাবে জেনে নিন –
শাশুড়ি-বউমা : শাশুড়ি ও মা হওয়ার আগে, একজন নারীর সর্বপ্রথম পরিচয় সে নারী। কিন্তু অধিকাংশ পরিবারে শাশুড়ি বউমার সম্পর্ক দেখলে মনে হয় না, “সাস ভি কভি বহু থি”। পরিবারের দায়িত্ব বউমার দায়িত্বে ছেড়ে দিতে তাঁর যত কুণ্ঠা। ছেলে হাতছাড়া হয়ে যাবে এই ভয়ে ছেলেকে কুমন্ত্রণা দিতেও শাশুড়ি পিছ পা হন না। পুত্রবধূকে গঞ্জনা করেন। নাতির জায়গায় নাতনির জন্ম দেওয়ার অপরাধে কোণঠাসা করে দেন তাঁকে। কন্যাভ্রূণ হত্যায় শাশুড়িরও কম ইন্ধন থাকে না। তারপর পণ না দেওয়ার অপরাধে বউমাকে হত্যা করার অপরাধেও তো শাশুড়িদের হাজতবাস কম হয়নি। এসব শুনে এটাই বারংবার মনে হয়, সত্যিই মেয়েমানুষ মেয়েমানুষকে দয়া করে না।
বান্ধবী নাকি চোখের বালি : একসঙ্গে পথ চলা শুরু দুই সখীর। স্কুল পেরিয়ে, কলেজ-ইউনির্ভাসিটির গণ্ডি পেরিয়ে একই সঙ্গে বেড়ে ওঠা দুটি কুড়িও কিন্তু চিরশত্রু হয়ে উঠতে পারে। সেই একই বৃন্তের দুটি কুসুম হয়ে ওঠে একে অপরের কাঁটা। এর কারণ কিন্তু স্রেফ হিংসে। কিছুতেই সহ্য হয় না সইয়ের সুখ। প্রত্যেক স্তরে প্রিয়সখীকে খাটো করাই হয়ে ওঠে একমাত্র লক্ষ্য। সেই ছোটো থেকে শুরু হয় কুৎসিত রেষারেষি। প্রথমে স্কুল ও বন্ধু মহলে তার ত্রুটিগুলিকে তুলে ধরা। তারপর সখীর প্রেম ভেঙে দেওয়া। সখীর বাবা-মায়ের কাছে বিশ্বস্ত ব্যক্তি হয়ে সখীকে বদনাম করা। সখীর সংসারে আগুন ধরানো ও পূর্বপ্রেমের উল্লেখ করে তার সম্পর্ক ভাঙা। একজন বান্ধবীর পক্ষে এসবই সম্ভব। এবং ঘটেও তাই।
মা ও মেয়ে : পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সম্পর্ক মায়ের সঙ্গে তাঁর সন্তানের সম্পর্ক। এই নাড়ির টানকে কেউ আলাদা করতে পারে না। স্বয়ং ঈশ্বরও না। কিন্তু বাস্তব পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে কখনও সখনও মা-ও হয়ে ওঠেন তাঁর কন্যার সবচেয়ে বড় শত্রু। এর কারণ ইগো কিংবা অতি স্নেহ। ইগো বা অহংবোধ মানুষকে অনেক নীচে নামাতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় চিরকাল কর্তৃত্ব করে আসা মা মেয়েকে কর্তৃত্ব করতে দিতে পছন্দ করেন না। তিনি সেখানেও কর্তা। মেয়ের জীবন তিনিই স্থির করেন। দায়িত্ব নিয়ে মেয়ের সম্পর্কে আগুন ধরান। নিজের পছন্দ করা পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন। বিয়ের পরও কিন্তু মেয়েকে মুক্ত জীবন কাটাতে দেন না। সেখানেও তিনিই কর্তা। মেয়ের সংসারে বারংবারং হস্তক্ষেপ করে তাঁর সংসারটাই রসাতলে পাঠিয়ে দেন।
এক মেয়েই আরেক মেয়ের সংসার ভাঙে: পরকীয়ার কাহিনি নতুন কিছু নয়। বিবাহিত নারী ও পুরুষের পুণরায় সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার ঘটনা কেবলই মুচমুচে সাহিত্যবদ্ধ নয় আর। একজন বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই নারী ভুলে যেতে থাকে পুরুষটির সামাজিক অবস্থান। তার ঘরে যে আগে থেকেই একজন স্ত্রী বর্তমান সেটা সে গ্রাহ্যের বাইরে ধরে নেয়। পুরুষটিকে বিয়ে ভাঙার জন্য চাপ দিতে শুরু করে। সেখানেই বাঁধে গোল। পূর্ব অঙ্গীকারবদ্ধ পুরুষের পক্ষে দায়মুক্ত হওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়ে তখন। সেই নারী পুরুষের উপরই আঙুল তোলে। কালো হুমকি ছুড়ে দেয়। চাপে পড়ে বিবাহবিচ্ছেদও হয় কারও কারও, কিন্তু এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সেই মেয়েটির যাঁর কোনও দোষই নেই। যে বিনাদোষেই স্বামীর ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়।