Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

 

 

sohel.................citiখোলা বাজার২৪ শনিবার,২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সোহেল আর কে হুসেইন বলেন,বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে কার্ড জালিয়াতির ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। সেখানে কোনো গ্রাহক যদি জালিয়াতির শিকার হন, ব্যাংকই তাঁর দায় বা ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করে থাকে। আমাদের এখানেও যে ঘটনা ঘটেছে তাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ব্যাংকগুলো দিয়েছে। সেদিক থেকে চিন্তা করলে এ ধরনের ঘটনায় ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গ্রাহকের স্বার্থ পুরোপুরি সুরক্ষিত। তারপরও এ ধরনের ঘটনা আমাদের ব্যাংক খাতের জন্য শিক্ষণীয় ও সতর্ক হওয়ার একটি বার্তা। বিদেশিদের সংশ্লিষ্টতায় এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনা এখানে এটাই প্রথম। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এখানে এটিএম ও কার্ড সেবা চলে আসলেও বিদেশি প্রতারক বা জালিয়াতি চক্রের খুব বেশি নজর ছিল না  এ ছাড়া আমাদের দেশে কার্ডে লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি সীমা নির্ধারিত আছে। কিন্তু বিদেশি যারা জালিয়াতকারী, তাদের লক্ষ্য থাকে সাধারণত মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের প্রতি। এ কারণে এত দিন তাদের কাছে বাংলাদেশ বড় টার্গেট ছিল না।

প্রযুক্তির বিপরীতে প্রযুক্তির ব্যবহার করেই এ ধরনের জালিয়াতি ঘটানো হয়েছে। তাই জালিয়াতি প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত বিশ্বে প্রতিরোধক যেসব ব্যবস্থা বা প্রযুক্তি রয়েছে, আমরাও সেগুলোর ব্যবহার বাড়াচ্ছি। আমাদের ব্যাংকের মোট ২৮০টি এটিএমের মধ্যে ৩০টিতে আগে থেকেই জালিয়াতি প্রতিরোধক যন্ত্র বা অ্যান্টি স্কিমিং ডিভাইস বসানো ছিল। সেগুলো আপডেট করার পাশাপাশি এখন বাকিগুলোতেও সর্বাধুনিক জালিয়াতি প্রতিরোধক যন্ত্র বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ম্যাগনেটিভ কার্ডের পরিবর্তে চিপসংবলিত কার্ড চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রাহকের তথ্যের অধিকতর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নতুন সফটওয়্যার বসানো হচ্ছে। এ ছাড়া গ্রাহকসচেতনতা তৈরি, এটিএম বুথে দায়িত্ব পালনকারী নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গ্রাহকের সুরক্ষা বা স্বার্থ আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ কথাও মনে রাখতে হবে, জালিয়াতি প্রতিরোধে প্রযুক্তির যত ব্যবহারই করা হোক না কেন, তারপরও জালিয়াতির সম্ভাবনা থেকেই যাবে। জালিয়াতি প্রতিরোধে আমরা যেমন সক্রিয়, ঠিক তেমনি বিশ্বজুড়ে জালিয়াতকারীরাও সক্রিয়। এক প্রযুক্তির বিপরীতে তারা অন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে। তাই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে জালিয়াতি একেবারে বন্ধ করে দেওয়া যাবে এমন নিশ্চয়তা বিশ্বের কোথাও কেউ দিতে পারবে না। আমরা গ্রাহককে এ নিশ্চয়তা দিতে পারি, গ্রাহকের গাফিলতি বা সংশ্লিষ্টতা ছাড়া যদি তিনি জালিয়াতির শিকার হন, তাহলে তার পরিপূর্ণ ক্ষতিপূরণ ব্যাংকই বহন করবে।
জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আমাদের তিনজন কর্মকর্তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কী অভিযোগ, তা এখনো আমরা জানি না। তা সত্ত্বেও পুরো ঘটনাটি আমাদের ব্যাংকের পক্ষ থেকেও অভ্যন্তরীণভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। নিজস্ব তদন্তে ও পুলিশের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে। ব্যাংকার হোক আর যেই হোক, আমরা চাই এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনা হোক। সে জন্যই আমাদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।