খোলা বাজার২৪ শনিবার,২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: ইউসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন,বাংলাদেশে একসঙ্গে কয়েকটি ব্যাংকে এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন ব্যাংকে কিছু কিছু জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সেগুলোর সমাধান করা হয়। আমাদের ব্যাংকসহ একাধিক ব্যাংকের এটিএম বুথে ‘স্কিমিং ডিভাইস’ বসিয়ে কার্ডের তথ্য চুরি করে পরে ক্লোন কার্ড তৈরির মাধ্যমে জালিয়াতির ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের ব্যাংকের ১২ জন গ্রাহকের হিসাব থেকে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো তুলে নেওয়া হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক দিন ধরে এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনা ঘটে আসছে। আমাদের এখানে প্রথমবারের মতো এ ধরনের ঘটনা।আমি মনে করি এটি ব্যাংক খাতের জন্য ‘জেগে ওঠার সংকেত’। প্রযুক্তির বিপরীতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ জন্য সরাসরি ব্যাংককে দায়ী করা মোটেই যুক্তিসংগত নয়।আমার মতে, এটি ব্যাংক খাতের জন্য নতুনভাবে তৈরি হওয়ার একটি সংকেত। এটিএম কার্ডের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আমরা বর্তমানে যে পরিবেশে রয়েছি, তা পশ্চিমা দেশগুলোর চেয়ে একটু পিছিয়ে। জালিয়াতির এ ঘটনা সেই পরিবেশটাকে উন্নত করতে সহায়তা করবে।আগে থেকেই আমাদের ব্যাংকে প্রতিরোধমূলক অনেক ব্যবস্থা ছিল। আমাদের সব কার্ডে বা সব গ্রাহকের জন্য মোবাইল ফোনের খুদে বার্তা বা এসএমএস সংকেত চালু ছিল। এ ছাড়া সবগুলো কার্ডই চিপ বেইজড কার্ড। এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে এধরনের কার্ডই সবচেয়ে নিরাপদ। তারপরও বলব, প্রযুক্তি এমন একটি বিষয়, যেখানে সব সময় হুমকি থাকবে। এ ঘটনার পরপরই
আমরা আমাদের সব এটিএমে জালিয়াতি প্রতিরোধক যন্ত্র বা অ্যান্টি স্কিমিং ডিভাইস বসানোর উদ্যোগ নিয়েছি। পাশাপাশি বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ফ্রড অ্যানালাইজার বা জালিয়াতি পরিবীক্ষণ সফটওয়্যার বসানোর কাজটিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জালিয়াতি প্রতিরোধে গ্রাহক সচেতনতাও কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রাহককেই সবার আগে সচেতন হতে হবে। তারপরও যদি কোনো জালিয়াতির ঘটনা ঘটে এবং তার জন্য কোনোভাবেই গ্রাহকের দায় না থাকে, তাহলে গ্রাহকের পুরো ক্ষতিপূরণের ভার কিন্তু ব্যাংকই বহন করবে। বিমার আওতায় আমাদের প্রতিটি গ্রাহকের হিসাব সুরক্ষিত করা আছে। গ্রাহকের স্বার্থই আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেই স্বার্থ সুরক্ষায় আমরা সব ধরনের ব্যবস্থায় গ্রহণ করেছি।
ব্যাংকার জড়িত থাকুক বা না থাকুক, যেকোনো ধরনের পদ্ধতিগত বা সিস্টেমিক জালিয়াতির ঘটনার দায় কিন্তু দিন শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ঘাড়ে এসেই পড়ে। এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনায় ব্যাংকগুলোকেই গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। আমাদের ব্যাংকের কথা আমি বলতে পারি। আমরা এমন একটি পদ্ধতি অনুসরণ করি, যেখানে আমাদের কোনো ব্যাংকার যাতে সহজে জালিয়াতির ঘটনা ঘটাতে না পারেন। প্রতিটি কাজের জন্য আলাদা আলাদা দায়িত্ব বণ্টন করা আছে। তবে এককভাবে কোনো ব্যাংক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারবে না। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো সব ব্যাংককে সামষ্টিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।