
রিজভী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কমিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন নির্বাচন কমিশন। এমনকি নির্দেশনাও শিথিল করা হচ্ছে। কী উদ্দেশ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা কমানো ও নির্দেশনা শিথিল হচ্ছে, কেন কেন্দ্র প্রতি তিনজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে তা সবার কাছে অত্যন্ত সুস্পষ্ট। আগে পৌরসভা নির্বাচনে কমিশনের নির্দেশনা ছিল যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অস্ত্র হাতে বসে থাকলে চলবে না। অথচ এবারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে কোনো জোরালো নির্দেশনা দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এইসব পরিকল্পনা ও নির্দেশনার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ইউপি নির্বাচনে শাসক দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জিতিয়ে দেওয়ার মহাপরিকল্পনা। তিনি বলেন, ভোটারবিহীন সরকার গণতন্ত্রের যে ভগ্নদশা করেছেন তাতে নিবেদিত প্রাণ হয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে সহযোগিতা করেছে এই নির্বাচন কমিশন।
রিজভী বলেন, শাসক দলের অনুকূলে ভোটকেন্দ্রের সংঘাতকে উস্কে দেওয়া, বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে শাসক দলের সহায়তা করা, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী মনোনীত প্রার্থীদের জিতিয়ে দেওয়া, ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা, ভোটের আগেই ভোটারদের বলে দেওয়া যে- তাদের ভোট হয়ে গেছে ইত্যাদি নির্বাচন নিয়ে সরকারি তামাশাকে যথার্থ নির্বাচন বলে বৈধতার সীল দেওয়াই হচ্ছে এখন নির্বাচন কমিশনের মুখ্য দায়িত্ব। না হলে নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের নানামুখী অনিয়ম এবং সংঘাত সংঘর্ষ যা শুধু বিএনপি বা বিরোধী দলেরই অভিযোগ নয়, সংবাদপত্রেও প্রতিদিন এই সমস্ত ঘটনাবলী ছাপা হচ্ছে, তথাপিও কমিশন সেগুলো তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে জনগণের ভোট নিয়ে সরকারের ইয়ার্কি ঠাট্টার সহচর হিসেবে সার্কাসের ভাঁড়ের মতো ভূমিকা পালন করছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, কমিশন শুধুমাত্র নিজেদের চাকরির প্রতিদানে নজরানা হিসেবে সরকারকে আগের নির্বাচনগুলোর ন্যায় ইউপি নির্বাচনেও ইউপি চেয়ারম্যান পদ পাইয়ে দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ভোটারবিহীন সরকারের আক্রমণে গণতন্ত্রের মৃতদেহে পচনের গন্ধ যেন না ওঠে সে জন্য কমিশন গণতন্ত্রের নামে কিম্ভুৎকিমাকার নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে সেই মৃতদেহে আগরবাতির ধোঁয়া আর গোলাপজল ছিটাচ্ছেন। মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দান, হুমকি-ধমকি এবং তুচ্ছ অজুহাতে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করছেন বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
সরকারের আজ্ঞাবাহী কমিশন দিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রায় ১১৪ জনের মতো বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারাসহ তাদের প্রার্থিতা হারিয়েছেন। কারণ কমিশন সরকারি দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে একেবারেই মরিয়া। এ ধরনের ঘটনা এ দেশে নজিরবিহীন।