খোলা বাজার২৪ শনিবার,২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: দগ্ধ দুই সন্তান মারা গেছে গতকাল। দগ্ধ মা সুমাইয়ার (৩৫) অবস্থাও অবনতির দিকে যাচ্ছে। চিকিৎসকেরা স্বজনদের তাঁর কাছাকাছি থাকতে বলেছেন। সুমাইয়ার স্বামী শাহনেওয়াজের (৫০) শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। আরেক সন্তান জারিফ ভালো আছে। তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
রাজধানীর উত্তরায় গতকাল শুক্রবার গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ সুমাইয়ার ভাগনে নাজমুস সাকিব আজ শনিবার এসব কথা বলেন। কাতর কণ্ঠে তিনি জানান, তাঁর দুই মামাত ভাইয়ের লাশ হাসপাতালের হিমাগারে রাখা আছে। মামী সুমাইয়া বলেছেন, মারা গেলে তাঁকে যেন বরিশালে দাফন করা হয়। তাঁরা জানেন না আরও লাশ তাঁদের দেখতে হবে কি না। কীভাবে কী করবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না।
বেঁচে যাওয়া একমাত্র মামাত ভাই জারিফ বিন নেওয়াজ শারীরিকভাবে অন্যদের চেয়ে ভালো আছে। তবে সে মানসিকভাবে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছে বলে জানান নাজমুস সাকিব। তিনি বলেন, তার কথাবার্তা এলোমেলো।
হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল বলেন, এ ধরনের রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকে। যত দূর সম্ভব তাদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জারিফের অবস্থা ভালো। তার শরীরের ৬ শতাংশ পুড়েছে। সে আশঙ্কামুক্ত।নাজমুস সাকিব বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাটসহ দূতাবাসের চিকিৎসক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে এসেছিলেন। তারা দগ্ধ ব্যক্তিদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন।
২০ ফেব্র“য়ারি উত্তরায় নতুন ভাড়া করা ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে ওঠেন মার্কিন দূতাবাসের প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ। গতকাল গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে তছনছ হয়ে যায় তাঁর পরিবার। আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছে দুই সন্তান সারলিন বিন নেওয়াজ (১৫) ও ১৪ মাস বয়সী জায়ান বিন নেওয়াজ। অগ্নিদগ্ধ গৃহকর্তা, গৃহকর্ত্রী ও অপর সন্তান যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বিছানায়।
বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক মুন্নী মমতাজ গতকাল বলেন, চারজনেরই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। শাহনেওয়াজের শরীরের ৯৫ শতাংশ ও তাঁর স্ত্রীর শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়েছে। সারলিনের ৮৮ শতাংশ ও জায়ানের শরীরের ৭৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। জারিফের পুড়েছে ৬ শতাংশ।