Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

40Kখোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১ মার্চ ২০১৬ : স্কুলে বাচ্চাদের খেলার মাঠে পোঁতা একাধিক ল্যান্ডমাইন! ক্লাসঘরে ২০ কিলোগ্রামে বোমা। টারগেট ছিল জঙ্গি দমন অভিযানে গিয়ে স্কুলে আশ্রয় নেওয়া নিরাপত্তা বাহিনী। কপালজোরে বোমা ফাটার আগেই অবশ্য হদিস মিলল সে সবের। পুলিশের জালে ধরা পড়া এক জঙ্গিকে জেরা করেই বোমাগুলির খবর মেলে। এতে দমতে রাজি নয় ভারতের মেঘালয়ের গারো জঙ্গি সংগঠন জিএনএলএ। সংগঠনের কম্যান্ডার টাকাম সিরা ‘ফেসবুক’-এ ছবি দিয়ে প্রেসার কুকার বোমা তৈরির পদ্ধতি শিখিয়েছে। দেওয়া হয়েছে আইইডি হাতে জঙ্গিদের ছবিও। বার বার জঙ্গি দমনে গিয়ে খালি হাতে ফেরার পর এই ঘটনায় ফের মেঘালয় পুলিশের মুখ পুড়েছে।
মেঘালয় পুলিশের আইজি (আইনশৃঙ্খলা) জি এইচ পি রাজু জানান, পূর্ব গারো হিল জেলার উইলিয়ামনগর থেকে ভোদাফোন নামে এক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জেরা করে জানা যায়, ২৬ জানুয়ারি জিএনএলএ-র সেনাধ্যক্ষ সোহন ডি সিরা ১৮ জন সঙ্গী-সহ আদুগ্রে গ্রামে গিয়েছিল। আদুগ্রে নিম্ন প্রাথমিক স্কুলের মাঠে ও ক্লাসঘরে ল্যান্ডমাইন এবং আইইডিগুলি পুঁতে দেয় তারা। ছক ছিল, আশপাশের জঙ্গলে জঙ্গিদমনে আসা যৌথবাহিনী যখন রাত কাটাতে স্কুলে ঢুকবে তখনই বিস্ফোরণ ঘটানো হবে। বোমা ফাটানোর দায়িত্ব ছিল ধৃত ভোদাফোনেরই। ভোদাফোনকে সঙ্গে নিয়ে ওই স্কুলে অভিযান চালায় পুলিশ ও বোমা নিষ্ক্রিয়ক বাহিনী। স্কুলের খেলার মাঠ থেকে একটি ল্যান্ডমাইন মেলে। অন্য বোমা ছিল কলসিতে।
দু’টি ক্লাসঘরের মাটি খুঁড়ে আরও তিনটি শক্তিশালী আইইডি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি ক্লাসঘরে ট্রাঙ্কের ভিতরে রাখা ছিল ২০ কিলোগ্রাম ওজনের একটি আইই়ডি। পুলিশ জানায়, এক মাস ধরে এতগুলি শক্তিশালী বোমা পায়ের তলায় নিয়েই বাচ্চারা ক্লাস করেছে, মাঠে খেলেছে। পরে ল্যান্ডমাইন ও বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করা হয়। অন্য দিকে, পুলিশ, সেনা, আধা সেনা যখন দিনের পর দিন জিএনএলএ নেতাদের ধরতে পারছে না, তখনই ফেসবুকে নাগাড়ে দলনেতা সোহন ডি সিরা, দলের প্রশিক্ষণ, শিবিরের ছবি লাগিয়ে অস্বস্তি বাড়িয়েছে জিএনএলএ কম্যান্ডার টাকাম সিরা।
এক ধাপ এগিয়ে এ বার সে প্রেসার কুকার মাইন তৈরির পুরো প্রণালীর ছবি ধাপে ধাপে ফেসবুকে পোস্ট করেছে। জঙ্গি নেতা তার আদর্শ ও দলের ছবি ফেসবুকে লাগিয়ে চলেছে জেনেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় কেন? আইজি বলেন, ওই ছবিগুলিই আমাদের কাছে সংগঠন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এমনকী, রাজু নিজেও ওই ছবিগুলি সেভ করে হোয়াট্সঅ্যাপে শেয়ার করে থাকেন। এক দিকে জঙ্গিদের ধরতে পারছে না পুলিশ, অন্য দিকে সেই জঙ্গিদের লাগানো ফেসবুকের ছবি সংগ্রহ করেই তথ্য জোগাড়ে ব্যস্ত পুলিশ! এমন আজব কাণ্ড উত্তর-পূর্ব তো বটেই, ভারতেও বিরল।