Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

48Kখোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১ মার্চ ২০১৬ : এই বিশ্ব সংসারে অনেক ঘটনা ঘটে যার কোনো ব্যাখ্যা নেই। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন দুর্গম দইখাওয়া চরে। যখন কাফনের কাপড় পরানো হবে ঠিক সেই মুহূর্তে নড়ে উঠলেন মৃত ঘোষিত জহুরা বেগম (৩৫)।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়নের অধিনে গৃহবধূর বাবার বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি)।
অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান জহুরা বেগম। মৃত্যুর সংবাদ মাইকিং করে প্রচার করাসহ কবর খোড়াও শেষ করা হয়। জানাজা করার জন্য দলে দলে মানুষও হাজির বাড়িতে। ১৩ দিনের শিশু সন্তানকে রেখে মায়ের এমন মৃত্যুতে শোকে স্তব্দ পরিবারের ও ওই চরের মানুষজন। এরই মধ্যে গোসল শেষ করে কাফনের কাপড় পরাবে। ঠিক এমন সময় নড়ে উঠলেন তিনি।
দইখাওয়া চরে মেম্বার জুরান আলী ও ওই পরিবারের কাছে থেকে জানা গেছে, ওইদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ করেই অচেতন হয়ে পড়ে। চরের পল্লী চিকিৎসক লিয়াকত আলীকে ডেকে আনা হয়। তিনি রোগীকে দেখে মৃত্যু ঘোষণা করেন। এরপর পরই শুরু জানাজাসহ দাফন কার্যক্রম। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দাফনের সময় নির্ধারণ করে চরজনপদে শোক সংবাদটি মাইকিং করে প্রচার করা হয়। কবর খোড়াসহ সকল কাজ শেষ করে জানাজা করার আগ মুহূর্তে তার গায়ে কাফনের কাপড় পরানোর সময় ঘটে ওই ঘটনা।
দইখাওয়া চরের দিনমজুর আমির হোসেনের কন্যা জহুরা বেগমের বিয়ে হয় রৌমারী উপজেলার গাছবাড়ি গ্রামে। সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য জহুরা বেগম চলে যায় তার বাবার বাড়িতে।
তার বাবা আমির হোসেন জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় জহুরা বেগম। জন্মের পর পরই শিশু সুস্থ থাকলে মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৩ দিন ধরে এক প্রকার অচেতন অবস্থায়ই ছিলেন। চরের পল্লিচিকিৎসক ও একাধিক কবিরাজকে দেখানো হয়েছে। কিন্তু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় এবং সচেনতার অভাবে তাকে চিকিৎসার জন্য কোনো হাসপাতালে নেয়া হয়নি। তবে চরের পল্লিচিকিৎসক ও কবিরাজি চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সোমবার খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, ওই গৃহবধূ কিছুটা সুস্থ। চিকিৎসার জন্য তার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।
স্বামী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মৃত্যুর সংবাদ দেয়া হয়। এ সংবাদ পেয়ে আমি ভেঙে পড়ি। তাছাড়া মরা মানুষকে যেভাবে ফেলে রাখে সে অবস্থায় থাকার কারণে আমি বা”চার মা মারা গেছে কিনা তার দিকে কোনো নজর ছিল না। পরের ঘটনা তো আপনার শুনলেন। এখন চিকিৎসার জন্য তাকে রৌমারী উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হবে।’
ঘটনাস্থল দইখাওয়া চরের সংশ্লিষ্ট সাহেবের আলগা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন জানান, আমিও শুনেছি। যে মরা মানুষ বেঁচে উঠেছে। পরিবারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মৃত ঘোষণাকারী পল্লিচিকিৎসক লিয়াকত আলীর সঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাড়ির সবাই কয় যে মারা গেছে। বাড়িতে মরা মানুষের মতো চারদিকে কান্নাকাটি। এ অবস্থায় রোগীর অবস্থা এত দুর্বল ছিল যে, মরছে না বেঁচে আছে তা তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পারিনি।’