খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২ মার্চ ২০১৬ : অনেক ধরনের ‘সন্দেহের কথা’ মাথায় রেখে ঢাকার রামপুরার ভাই-বোন ‘হত্যাকাণ্ডের’ তদন্ত হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সাম্প্রতিক শিশু হত্যাগুলো ঘটানো হচ্ছে নানা ধরনের ‘ফায়দা হাসিলের’ জন্য।
বুধবার সচিবালয়ে নিজের কার্যালয়ে শিশুহত্যা, ব্যাংক কার্ড জালিয়াতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের মুখোমুখি হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, গত কিছুদিনে বেশ কয়েকটি শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেছে; প্রতিটিই ‘হৃদয়বিদারক, পৈশাচিক’।
রামপুরার ভাই-বোন হত্যার তদন্ত নিয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “দুই শিশু হত্যা কেন হয়েছে- তা তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের আগে কিছু বলতে পারছি না। তবে আমরা সন্দেহ করছি অনেক কিছু।”
সোমবার রাতে রামপুরা বনশ্রী থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ছাত্রী ইশরাত জাহান অরণী (১৪) ও তার ছোটভাই আলভী আমানকে (৬) অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবার বলেছিল, একটি চায়নিজ রেস্তোরাঁর খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় দুই ভাই-বোন মারা যায়। কিন্তু মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি ‘হত্যাজনিত’ মৃত্যু।
ওই দুই শিশুর বাবা, মা ও খালাকেও এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে টেনে কামাল বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, হত্যাকারীরা সেই শিশুর ‘কাছের আপনজন’।
“এখানে অনেক বাবা-মাও শিশু হত্যার সঙ্গে কোনো কোনো জায়গায় জড়িত, পাড়া প্রতিবেশী জড়িত, সম্পত্তির লোভ এখানে (শিশু হত্যা) আছে।
“নানা ধরনের ফায়দা হাসিলের জন্য এই শিশু হত্যা করা হচ্ছে।”
সিলেটের রাজন হত্যার বিচারের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি শিশু হত্যার ঘটনায় জড়িততের চিহ্নিত করা হয়েছে।
এটিএম কার্ড জালিয়াতিতে বিদেশি নাগরিক জড়িত থাকার বিষয়ে প্রক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “ইদানিংকালে যেটা দেখলাম, বিদেশিরা এসেও প্রতারণায় জড়িত হয়েছে। পিওতর নামে এক বিদেশি ভদ্রলোক, আসলে সে জার্মান নাগরিক, কিন্তু পোল্যান্ডের ভিসা নিয়ে এসেছে।
“শুধু আসেননি, বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের যোগসাজশে এসেছেন এবং ব্যবসার কথা বলে কার্ড জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়ছেন।”
কার্ড জালিয়াতি তদন্ত ‘সঠিক’ পথেই যাচ্ছে মন্তব্য করে কামাল বলেন, “বিদেশিদের মনিটর করছি। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে তাদের নোটিস দেওয়া হচ্ছে। তারা ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নিচ্ছেন কিংবা যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে তাদের ধরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
গতবছর দুই বিদেশি নাগরিক খুন হওয়ার পর যখন বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাহীনতার কথা বলা হচ্ছিল সে সময় বাংলাদেশে ২ লাখ ৬০ হাজার বিদেশি ছিলেন বলে জানালেও বর্তমানে কতজন আছেন তার ‘সঠিক সংখ্যা’ জানাতে পারেননি মন্ত্রী।
কার্ড জালিয়াতিতে বিদেশিদের সংশ্লিষ্টতা ধরা পড়ার পর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে কামাল বলেন, “আমরা কাউকে নজরদারির বাইরে রাখছি না- সে যেই হোক।”
এসব জালিয়াতির ঘটনায় যারা ‘সহায়তা বা আশ্রয় প্রশ্রয়’ দিয়েছে, তাদেরও বিচার হবে বলে জানান মন্ত্রী।