Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

11kখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৪ মার্চ ২০১৬: মায়ের কোলই সন্তান্দের জন্য সবেচেয়ে বেশী নিরাপদ-এ কথাটি সত্য হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ কথাটিও মিথ্যে বলে প্রমাণিত হয়। যে মা সন্তানদেরকে আদর-যতœ করে বড় করতে থাকেন অথচ সে মায়ের কাছেই খুন হলেন ২শিশু। পাঠক, বলছিলাম রাজধানীর বনশ্রীতে ১৪ বছর বয়সী নুসরাত জাহান এবং তার ছোট ভাই আলভী আমানের (৬) হত্যাকারী তাদের গর্ভধারিনী মা মাহফুজা মালেক জেসমিনের কথা। যিনি নিজেই তার ২ সন্তানকে ‘খুন’ করেছেন বলে র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন।
র‌্যাব-জেসমিনের মধ্যকার হওয়া কথার চুম্বক অংশ : সন্তানদের কীভাবে হত্যা করলেন? তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এমন প্রশ্নের জবাবে জেসমিন বলেন, ‘ওই রুমে আমার ছেলে এবং মেয়ে ছাড়া আর কেউ ছিল না। আমার মেয়ে আমার ওড়নাটা ব্যবহার করত। প্রথমে ওড়না দিয়ে ওরে প্যাঁচাইয়া ধরি। তারপর মেয়ে নিচে পড়ে যায়। কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তি করার পর মেয়ে নিস্তেজ হয়ে যায়। তারপর ছেলেটাকে ধরি। ছেলেও ওই সময় ঘুমানো ছিল।’
কেন হত্যা করলেন? জানতে চাইলে শিশুদের মা জেসমিন বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারবে না, কিচ্ছু পারবে না। ওদের দ্বারা কিচ্ছু হবে না। এ বিষয়টি আমার সব সময় মনের মধ্যে শুধু ঘুরঘুর করত। অনেক কষ্ট হতো আমার। তবে এ বিষয়টি আমি আমার স্বামী কিংবা অন্য কারও কাছে শেয়ার করি নাই।গত ফেব্র“য়ারি মাসের ৪ তারিখ থেকে এ বিষয়টি সব সময় আমার মাথায় কাজ করত। আমি ঘুমাতে পারতাম না।
’ দুই বাচ্চা মনে হয় আপনার নয়, জিজ্ঞাসাবাদকারী কর্মকর্তার এমন প্রশ্নের জবাবে জেসমিন বলেন, ‘স্যার, বাচ্চা দুইটা আমার। সিজার কইরা হইছে।
বাচ্চা দুইটার জন্য আমার অনেক কষ্ট হইছে। আপনারা হয়তো বলতে পারেন তুমি কান্না কর না। বাচ্চারা মারা যাওয়ার পর আমি অনেক কাঁদছি। এখন আমার চোখের পানি শুকাইয়া গেছে। এখন মনে হয় আসে না। আমার মনে হয় বাচ্চা দুইটাকে যদি আমি কাছে পাইতাম, ওদের যদি একটু জড়াইয়া ধরতে পারতাম তা হইলে মনে হয় আমার চোখের পানি আবার ফিরে আসত।’
সন্তানদের মারার পর স্বীকার করেননি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জেসমিন বলেন, ‘আমি কাউকে বলি নাই। আমি বিপদ থেকে বাঁচতে চাইছিলাম। মনে করছি যা হওয়ার তা তো হইছেই। এখন যদি আমি বলি তা হইলে তো আমি ধরা পড়ে যাব। আমার ফাঁসি হবে। এখন যদি বাঁচতে পারি তাহলে নতুন করে জীবনটা আবার শুরু করতে পারব।’
দুই বাচ্চাকে হত্যা করা তার ভুল হয়েছে এমন দাবি করে জেসমিন বলেন, ‘আমার স্বামী সব সময় ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। তার পরও তাকে যদি আমি বলতাম তাহলে আমাকে সে একটা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাইত। তাহলে আজ এমন ঘটনা ঘটত না।