খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৪ মার্চ ২০১৬: ভূমধ্যসাগরের তীরে নিথর পড়ে থাকা তিন বছরের সিরীয় শিশু আয়লানের মৃতদেহ ঝড় তুলেছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে। বলতে গেলে কাঁপিয়ে দিয়েছিল পুরো বিশ্বকে। সাত মাস আগে ভূমধ্যসাগরের তীরে মৃত পড়ে থাকা সেই আয়লান কুর্দিসহ বাকি চারজনের মুত্যৃর দায়ে দুই সিরীয়কে চার বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে তুরস্কের একটি আদালত।
গ্রিসের একটি উপকূলে আয়লানের মৃতদেহ ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে সারা পৃথিবীর মনোযোগ ঘুরিয়ে দিয়েছিল শরণার্থী সমস্যার দিকে। আয়লানের মৃত্যুর দায়ে সাজাপ্রাপ্তরা হলেন মুফাওয়াকা আলাবাস এবং আসেম আলফ্রাদ। মানবপাচার এবং ইচ্ছাকৃত অবহেলায় মৃত্যুর জন্য তাদের দায়ী করা হয়েছে জানিয়েছে বিবিসি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভূমধ্যসাগরের তীরে পড়ে থাকা আয়লানের ছোট নিথর দেহের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বড় ধরনের ঝাঁকুনি খায় অভিবাসী-সংকট নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ইউরোপ।
ঘুম ভাঙে বিশ্ববাসীরও। সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগের অনলাইন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আয়লানের ছবিটি অনেকখানি পাল্টে দেয় জনমত। শরণার্থী সমস্যা নিয়ে ইউরোপের যে নেতারা আগে নির্লিপ্ত ছিলেন, তারাও মানবিক উদ্যোগের পথে এগোনোর কথা বলেছেন। অন্তত দুই লাখ অভিবাসীকে গ্রহণ করতে ইউরোপকে অনুরোধ করে জাতিসংঘ। শিশু আয়লানের মরদেহের ১০০ মিটার দূরে পড়ে ছিল তার ভাই গালিবের মরদেহ।
মায়ের মরদেহ পাওয়া গিয়েছে কাছের আরেকটি সৈকতে। তুরস্কের পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। বিপজ্জনক উপায়ে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে এ বছর আড়াই হাজার মানুষ প্রাণ হারালেও আয়লানের ছবিটি আলাদাভাবে মর্মস্পর্শ করে বিশ্ববাসীর। কার্যত শরণার্থীদের বিপন্নতা আর মরিয়া অবস্থার প্রতীকে পরিণত হওয়া ছবিটিতে দেখা যায়, সৈকতের বালুতে মুখ গুঁজে শুয়ে আছে আয়লান। তার পরনে লাল জামা, নীল শর্ট প্যান্ট, পায়ে হালকা জুতা।