Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

13kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ৫ মার্চ ২০১৬ : দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে একদিন বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখি থাকলেও বাকি চারদিন গেছে পতন ধারায়। ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা কমিয়ে আনায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে প্রত্যাশা তা পূরণ না হওয়ায় এ ধরনের দরপতন বলে মনে করা হচ্ছে। প্রতিটি মূল্য সূচকের পাশাপাশি এ সময়ে দর কমেছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের।
শেয়ারাবাজরের উত্থান-পতন প্রসঙ্গে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ইফতেখার-উজ-জামান বলেন, শেয়ারবাজারের সূচক ওঠানামা স্বাভাবিক নিয়ম। বর্তমানে পুঁজিবাজার বিনিয়োগ উপযোগী বাজার। শেয়ারবাজারের সূচকের গতি দেখে অর্থাৎ উত্থান-পতনে আতঙ্কিত না হয়ে শেয়ার কেনাবেচা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গুজবে আতঙ্কিত না হয়ে জেনে-বুঝে ভালো কোম্পানিতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে হবে। তাহলে সূচক কমে গেলেও ব্যবসা কমে যাবে না।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা। এভাবে দরপতনে পুঁজি হারিয়ে পথে বসছেন বিনিয়োগকারীরা।
গেল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার লেনদেন শুরুতে বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৭৩ কোটি ৯২ লাখ ২ হাজার কোটি টাকা; যা সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে নেমে আসে ৩ লাখ ১০ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন হারিয়েছে ৬ হাজার ৫১৭ কোটি ৭৭ লাখ ৯১ হাজার টাকা বা ২ দশমিক ০৬ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২৪৩ কোটি ৩০ লাখ ৭৭ হাজার ৯১৪ টাকার শেয়ার; যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৫৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বা ১৩ দশমিক ০২ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে (চার দিনে) ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৯৮৪ কোটি ৮৬ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮৬ টাকার শেয়ার। গত সপ্তাহে ডিএসইতে টার্নওভারের পরিমাণও কমেছে।
প্রতিদিন গড়ে টার্নওভার দাঁড়িয়েছে ৪৪৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকায়, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪৯৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে টার্নওভার কমেছে ৪৮ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
সপ্তাহ শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ০৭ শতাংশ, ডিএস ৩০ সূচক কমেছে ৩৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়া শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক কমেছে ২৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭২টির, কমেছে ২৩১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির। আর লেনদেন হয়নি তিনটি কোম্পানির শেয়ার।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারের সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ২ দশমিক ০৬ শতাংশ কমে ১৪ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, বাজারে তারল্য ও আস্থা দুটিরই সঙ্কট রয়েছে। এছাড়া কোম্পনিগুলো আশানুরূপ মুনাফা দিচ্ছে না। অন্যদিকে পুঁজিবাজারে ব্যাংক ঋণ সমন্বয়ের সময়সীমা (সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট) আশ্বাসের মধ্যে ঝুলে আছে। এটা বাড়ালে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক হবে। এতে ৩ থেকে ৪ হাজার কোটি টাকার লোকসান থেকে মুক্তি পাবেন বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে অর্থের যোগান বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে বাজার সম্পর্কে নেতিবাচক বক্তব্য ভেবে-চিন্তে দেয়া উচিৎ বলে মনে করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি সায়েদুর রহমান।