Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

5kখোলা বাজার২৪, রবিবার, ৬ মার্চ ২০১৬ :  রাজশাহীর বাগমারা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তিন সদস্যকে বোমাসহ আটক করা হয়েছে, যারা ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে হামলার পরিকল্পনায় ছিল বলে র‌্যাবের ভাষ্য।
এরা হলেন- গোপালগঞ্জের আমিনুর রহমান সুপন (৩৫), গাজীপুরের আবু সাইদ মানিক (২৮) ও নারায়ণগঞ্জের পিএম শাহীন শাহ তানিন (৫২) ।
রোববার ভোর ৫টার দিকে উপজেলার সগুনা পূর্বপাড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাব-৫ এর এএসপি অলক বিশ্বাস জানান।
তিনি বলেন, রাতে পূর্বপাড়া গ্রামে তিন অপরিচিত লোককে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয়রা র‌্যাবকে খবর দেয়। পরে ওই তিনজনকে আটক করে তল্লাশি চালানো হলে তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগে ১৬টি হাতবোমা, সাতটি পেট্রোল বোমা ও আটটি জিহাদি বই পাওয়া যায়।
“আটক তিনজনই জেএমবির সদস্য। তারা ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের জানিয়েছে।”
অলক বিশ্বাস জানান, আটকদের রাজশাহী র‌্যাব সদর দপ্তরে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরে এ ‍বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।
গতবছর ডিসেম্বরে এই বাগমারাতেই আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়। জঙ্গি তৎপরতার কারণে রাজশাহীর বাগমারা এর আগেও বহুবার সংবাদ শিরোনাম হয়েছে।
গতবছর অগাস্টে লুৎফর রহমান নামের একজনকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিনি জেএমবির সাবেক নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইয়ের উপদেষ্টা ছিলেন। রাজশাহী অঞ্চলে জেএমবি সদস্যদের আবারও সংগঠিত করার তৎপরতা চালাচ্ছিলেন তিনি।
শায়খ আবদুর রহমানের নেতৃত্বে গত শতকের শেষভাগে জেএমবি নামের সংগঠনটি জঙ্গি কার্যক্রম শুরু করে। তিনি ও তার কয়েকজন সহযোগী আফগানিস্তানে যুদ্ধেও অংশ নেন।
আবদুর রহমান আফগানিস্তান থেকে ফিরলে জেএমবির কর্মকাণ্ড বিস্তৃতি পেতে থাকে। তবে তাদের তৎপরতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয় ২০০৩ সালের শুরুর দিকে। ওই বছর দিনাজপুর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে গ্রেপ্তার কয়েকজন জঙ্গির কাছে এ সংগঠন সম্পর্কে তথ্য পায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
২০০৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে শায়খ আবদুর রহমানের পরামর্শে জেএমবির শুরা কমিটির প্রধান সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ বা জেএমজেবি গঠিত হয়। ২০০৪ সালে সংগঠনটি বেপরোয়া হয়ে উঠে। রাজশাহীর বাগমারা ও নওগাঁর আত্রাই-রানীনগর ছিল তাদের বিচরণক্ষেত্র।
২০০৪ সালের ২০ মে নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলায় ইদ্রিস আলী ওরফে খেঁজুর আলী ও আব্দুল কাইয়ুম বাদশাকে হত্যা করে বাংলা ভাই ও তার সহযোগীরা। এরপর বাদশার মরদেহ উল্টো করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয় এবং খেজুর আলীকে টুকরো টুকরো করে লাশ পুঁতে ফেলা হয় মাটিতে।
গাছে লাশ ঝুলিয়ে রাখার সেই ছবি সংবাদমাধ্যমে এলে দেশজুড়ে রাতারাতি পরিচিত হয়ে ওঠে ‘বাংলা ভাই’ নামটি। ২০০৫ সালের ২১ ফেব্র“য়ারি সরকার জেএমবি ও জেএমজেবির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে ওই বছর ১৭ অগাস্ট ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা ফাটিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দেয় সংগঠনটি।
২০০৬ সালের ৬ মার্চ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে বাংলা ভাইকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সদস্যরা গ্রেপ্তার করে। এর চারদিন আগে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শায়খ রহমানকে।
ঝালকাঠি জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যার দায়ে ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ শায়খ আবদুর রহমান ও বাংলাভাইসহ ছয় শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করা হয়।