খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৭ মার্চ ২০১৬ : রান্নাঘরের গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হওয়া পরিবারের স্বামী ও দুই সন্তানের মৃত্যুর পর এবার মৃত্য বলে ঘোষণা করা হল মা সুমাইয়া আক্তারকে। তিনি এখনও মারা না গেলেও জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতালের চিকিৎসক।
সাত মসজিদ রোডের সিটি হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন ৪০ বছর বয়সী সুমাইয়া। হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক রাশেদ মাহমুদ রবিবার দুপুরে জানান, ‘সুমাইয়া ক্লিনিকালি ডেড। হার্ট ছাড়া শরীরের অন্য অংশ ঠিকমতো কাজ করছে না। এখান থেকে আবার জীবনে ফেরার আশা খুব একটা নেই।’ সুমাইয়ার মামাতো ভাই আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন, আমি বলব সুমাইয়া মারা গেছে। তবে চিকিৎসক এখনও ঘোষণা করেনি।’
গত ২৬ ফেব্র“য়ারি সকাল ৭টার দিকে উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর রোডের এক বাড়ির সপ্তম তলার ফ্ল্যাটে আগুন লেগে দগ্ধ হন সুমাইয়া, তার স্বামী ও তিন সন্তান। চার জনের মধ্যে দেড় বছরের জায়ান বিন শাহনেওয়াজ ও শাহালিন বিন শাহনেওয়াজ (১৫) ওইদিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যায়। পরদিন মৃত্যু হয় সুমাইয়ার স্বামী মো. শাহনেওয়াজের (৫০), যিনি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একজন মেইনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন।
এ পরিবারের মেজ ছেলে জারিফ বিন নেওয়াজকেও (১১) মায়ের সঙ্গে সিটি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। রবিবার সকালের দিকে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে তার মামা আবু সুফিয়ান জানান। জারিফের চাচা কামরুল হাসান জানান, আগামী বছরই শাহনেওয়াজের সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর কথা ছিল। গত ২০ ফেব্র“য়ারি উত্তরার ওই ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে উঠেছিলেন তিনি।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ধারণা, ওই বাসার গ্যাসের চুলা বা লাইনে সমস্যা ছিল। এর ফলে গ্যাস বের হয়ে রান্নাঘর থেকে পুরো ফ্ল্যাটে ছড়িয়ে যায় এবং সকালে চুলা জ্বালাতে গিয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। নতুন বাসায় ওঠার পর শাহনেওয়াজ গ্যাসের গন্ধ পেয়ে বাড়িওয়ালাকে বিষয়টি জানালেও তিনি গুরুত্ব দেননি বলে স্বজনদের অভিযোগ।
কামরুলের অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরা পশ্চিম থানায় এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা নথিভুক্ত করে রাখা হয়েছে।