খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৭ মার্চ ২০১৬ : চট্টগ্রামে ফকিরের আস্তানায় দুই জনকে গলা কেটে হত্যার মামলায় এক জেএমবি সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এসআই সন্তোষ চাকমা সোমবার চট্টগ্রামের আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে জেএমবি সদস্য সুজন ওরফে বাবুকে (২৮) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তিনি ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানার হরিণদিয়া মাদ্রাসাপাড়া গ্রামের মোমিনুল ইসলামের ছেলে।
ঘটনার দিন বায়েজিদ এলাকা থেকে আটক আবদুল মান্নান ওরফে মনাকে (৪০) মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
সন্তোষ চাকমা বলেন, “খুনের ঘটনায় জেএমবি সদস্য সুজন ওরফে বাবুর অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।”
গতবছর ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে বায়েজিদ থানার শেরশাহ বাংলাবাজারের পূর্বাচল এলাকায় ‘লেংটা মামু’ নামে পরিচিত ফকির রহমত উল্লাহর (৬০) আস্তানায় ঢুকে তাকে এবং তার খাদেম মো. আব্দুল কাদেরকে (৩০) গলা কেটে হত্যা করা হয়। স্থানীয়রা ধাওয়া করলে হাতবোমা ফাটিয়ে ছুরি হাতে পালিয়ে যায় খুনি।
এ ঘটনায় কাদেরের ভাই নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে পরদিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
একমাস পর ৫ অক্টোবর নগরীর সদরঘাট এলাকার ২৩ সেপ্টেম্বরের ছিনতাই ও খুনের একটি ঘটনায় জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান মো. জাবেদসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
তাদের মধ্যে এক জেএমবি সদস্য ফকিরের আস্তানায় খুনের ঘটনায় সুজন ওরফে বাবুর জড়িত থাকার বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দেয়।
বাবুর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আকবর শাহ ও কর্ণফুলী এবং ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানায় মোট পাঁচটি মামলা আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এসআই সন্তোষ জানান, ফকিরের আস্তানায় জোড়া খুনের ঘটনার সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোয় পরে হত্যা মামলার সঙ্গে বিস্ফোরক আইনের ধারা সংযুক্ত করা হয়।
তিনি বলেন, “দণ্ডবিধির ৩২৪, ৩২৬ ও ৩০২ ধারায় হত্যার ঘটনার পাশাপাশি বিস্ফোরক আইনের ৩ ও ৩ (ক) ধারায় একই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।”
অভিযোগপত্রে ছয় পুলিশ সদস্য, চিকিৎসক, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় এলাকাবাসীসহ মোট ২৫ জনকে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে।
সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন- বিস্ফোরক অধিদপ্তর চট্টগ্রামের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক শামসুল আলম, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের চিকিৎসক ডা. করিমুন্নাহার, বায়েজিদ থানার সেসময়ের ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা বায়েজিদ থানার সেসময়ের এসআই সৈয়দ ফারুক ও কন্সটেবল মনির হোসেন।