খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৭ মার্চ ২০১৬ : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রমাণিক, মরহুম বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলম, সংঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাসহ ১৪ বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালের স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
এটি দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রতি বছর স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
২৪ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে।
‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ ক্ষেত্রে
‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ ক্ষেত্রে এবার নয়জন স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন—
১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী এবং প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সংগঠক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ১৯৭১ সালে ভারতের মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং, অপারেশন ও শরণার্থী ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক।
একজন সফল রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট সমাজসেবক মরহুম মৌলভী আচমত আলী খান।
সুপারসনিক এয়ারক্রাফট এফ-৬ এর সফল পাইলট এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স গঠন প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) বদরুল আলম, বীরউত্তম।
১৯৭১ সালে রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর রাজশাহী পুলিশ লাইনস আক্রমণ প্রতিরোধে পুলিশ ফোর্স সংগঠিতকরণে নেতৃত্বদানকারী শহীদ শাহ আব্দুল মজিদ।
রাঙ্গামাটিতে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে নেতৃত্বদানের জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শাহাদাতবরণকারী রাঙ্গামাটির তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক এম আবদুল আলী।
১৯৭১ সালে লন্ডনের পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী এবং বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান স্বহস্তে লেখক মরহুম এ কে এম আবদুর রউফ।
১৯৭১ সালে দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত থাকাকালে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী এবং দিল্লিতে বাংলাদেশের প্রথম মিশন স্থাপনকারী কে এম শিহাব উদ্দিন।
মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার সপক্ষে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনকারী সৈয়দ হাসান ইমাম।
‘মাতৃভাষা’ ক্ষেত্রে
একুশে ফেব্র“য়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী মরহুম রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালাম স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন।
‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ ক্ষেত্রে
এক্ষেত্রে স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন কৃষি গবেষক এবং তোষা পাট ও দেশি পাটের জীবন রহস্য আবিষ্কারক মরহুম অধ্যাপক ড. মাকসুদুল আলম।
‘চিকিৎসাবিদ্যা’ ক্ষেত্রে
প্রথিতযশা শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ রফি খান (এম আর খান) পাচ্ছেন স্বাধীনতা পদক।
‘সংস্কৃতি’ ক্ষেত্রে
রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী এবং রবীন্দ্র সঙ্গীতগবেষক অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
স্বাধীনতা পদক পাচ্ছে নৌবাহিনী
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান এবং দেশের জলসীমায় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিরলস দায়িত্ব পালনরত বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে সরকার।
স্বাধীনতা পদকের ক্ষেত্রে সাধারণত পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আঠার ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, দুই লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, এবার অর্থ দুই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে।