Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

35kখোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০১৬ : চূড়ান্ত রায়ে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসি বহাল থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম; বলেছেন, অবমাননার অভিযোগ নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে তিনি আদালতের কাছে সময় চাইবেন।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার মীর কাসেমের আপিলের রায় ঘোষণা করে।
এ মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের সূত্র ধরে রায়ের মাত্র দুদিন আগে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন সরকারের দুইজন মন্ত্রী। প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে আলাদা বেঞ্চ গঠন করে পুনঃশুনানির দাবি তুলেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল।
রায়ের পর নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন খাদ্যমন্ত্রী।
সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত স্বস্তি প্রকাশ করছি। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, এই মামলার ১৬ কোটি বাদীর একজন হিসেবে এই রায়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এটা আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।
“আমরা যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি, এর মধ্যে দিয়ে তাদের ভাণ্ডারে আরও একটি সাফল্য যোগ হলো,” বলেন কামরুল।
গত ৫ মার্চ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মীর কাসেমের আপিলের পুনঃশুনানির দাবি তোলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক কামরুল।
তিনি বলেন, আপিলের শুনানিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন দলের কাজ নিয়ে প্রধান বিচারপতির অসন্তোষ প্রকাশের মধ্য দিয়ে ‘রায়েরই ইঙ্গিত’ মিলছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান।তাদের ওই বক্তব্য গণমাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়।
মঙ্গলবার মীর কাসেমের মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন নয় বিচারকের পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ বসে দুই মন্ত্রীকে তলব করে।
ওই বক্তব্যের কারণে আদালত অবমাননার কার‌্যক্রম কেন শুরু করা হবে না- তা জানাতে দুই মন্ত্রীকে ১৫ মার্চ সকাল ৯টায় হাজির হতে বলা হয় আপিল বিভাগের আদেশে।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, “দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে অশুভ ও অবমাননাকর বক্তব্যে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা স্তম্ভিত, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে আমরা মনে করি।”
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইনমন্ত্রী কামরুল বলেন, “আমি আদালতেরে প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আদালতের দিক–নির্দেশনা অনুয়ায়ী যাব। আদালত রুল নিশি জারি করেছেন, আমি টেলিভিশনে দেখেছি।
“হয়তো আদেশের কাগজ পেয়ে যাব। আমি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই সেই রুল নিশির জবাব দেব এবং আদালত যেভাবে নির্দেশ দেবেন সেভাবেই আমি অগ্রসর হব।”
এই রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কামরুল বলেন, সব প্রশ্নের উত্তর তিনি আদালতকেই দেবেন। তবে সেজন্য তিনি সময় চাইবেন।
“আমি আজই দেশের বাইরে যাচ্ছি। একটি সরকারি সফরে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর যাব। ১৬ বা ১৭ তারিখ দেশে ফিরব।
“আমি আদালতের কাছে আইনজীবীর মাধ্যমে সময় প্রার্থনা করব। এই সফরের জিও গত ২ মার্চ হয়েছে, আজ মালয়শিয়াতে একটি কনফারেন্সে যাচ্ছি।”
সাংবাদিকরা একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকলে এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে কামরুল বলে ওঠেন- “আমি আর কোনো প্রশ্নের জবাব দেব নাৃকোনো জবাব দেব না।”
কামরুল বলছেন, মন্ত্রী হিসেবে নয়, যুদ্ধাপরাধ মামলা নিয়ে ওই বক্তব্য ছিল তার ব্যক্তিগত মতামত।
“কিন্তু যতো কথাই বলি না কেন, আমি যে মন্ত্রিসভার একজন সদস্য এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই। কিন্তু বক্তব্য ছিল আমার নিজস্ব বক্তব্য, একজন বিচারপ্রার্থী মানুষ হিসেবে।