Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

50kখোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০১৬ : ফেসবুকে আইনজীবী সম্পর্কে আপত্তিজনক মন্তব্য ও হুমকির মামলায় গ্রেফতার এক প্রতারকের ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা।
সম্প্রতি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার সাইফুল ইসলাম সজিব নামের ওই প্রতারককে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আছে ফাঁদে ফেলে নারীদের জিম্মী করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ভয়াবহ তথ্য।
প্রথম দফায় রিমান্ড হেফাজতে আনার পর জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার ফাঁদ সম্পর্কে গোয়েন্দাদের চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয় সাইবার প্রতারক সজিব। তার কাছ থেকে আরো তথ্য বের করতে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করার কথা ভাবছে গোয়েন্দারা। বিভিন্ন পরিচয়ে প্রতারণা করা এ প্রতারকের বিরুদ্ধে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) তদন্ত করে নারী ধর্ষণ ও নারীদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে জিম্মী করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ব্যাপারে ভয়াবহ তথ্য পায়। ওই তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিলও করেছে সিআইডি।
গোয়েন্দা হেফাজতে প্রতারক সজিব জানিয়েছে, প্রথমে ফেসবুকে বন্ধুত্বের ফল আলাপ চারিতার সূত্র ধরে দেখা সাক্ষাৎ এবং শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে তা ভিডিও ধারণ করে জিম্মী করা। ভিডিও চিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতো সে। সাইবারে প্রতারণার মাধ্যমে (ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) এভাবে টার্গেট করে নারীদের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিতো কামরুল ইসলাম সজিবের বিরুদ্ধে অর্ধ শতাধিক সাধারণ ডায়েরী এবং ধর্ষণ, হত্যার হুমকিসহ ৪টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় একাধিকবার জেল খাটার পরও জামিনে বের হয়ে আবার শুরু করে একই ধরণের সাইবার প্রতারণা। একেক সময় একেক পরিচয়ে প্রতারণা করা এ প্রতারকের টার্গেটে পড়েন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। ওই আনজীবী সম্পর্কে ফেসবুকে আপত্তিজনক মন্তব্য পোস্ট দিয়ে জিম্মি করার চেষ্টা করেছিলো সজিব। এক পর্যায়ে ওই আইনজীবী আইসিটি অ্যাক্টে প্রতারক সজিবের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। ওই আইনজীবী সম্পর্কে ফেসবুকে আপত্তিজনক কথা পোস্ট ও মোবাইলে অশ্লিল প্রস্তাব দিয়ে তা না মানলে আপত্তিজনক ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকির ঘটনায় এ মামলা করেন আইনজীবী। মামলা তদন্তেও দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবিকে।
মামলার তদন্ত ও তদারকি কর্মকর্তা ডিবির এসি হাসান আরাফাত জানান, দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদে নারী আইনজীবী সম্পর্কে আপত্তিজনক তথ্য ও হুমকি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে সজিব। সেইসাথে নারীদের সাইবার প্রতারণার মাধ্যমে কিভাবে ফাঁদে ফেলে সে সম্পর্কেও চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয়। তাকে নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন জানানো হতে পারে। বর্তমানে সে জেলে রয়েছে।
এদিকে সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে ওই নারী আইনজীবী সজিবের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা ও জিডিও করেছেন। ওই নারী আইনজীবীকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা, অপহরণ এবং এসিডে ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। এর আগে ২০১২ সালে মৌলভীবাজারের মেটারন্যাল চাইল্ড হেলথ ফ্যামিলী প্লানিংয়ের চিকিৎসক মৌলভীবাজার থানায় একটি মামলা করেন। ওই নারী চিকিৎসককে সজিব মৌলভীবাজারে তার ফার্নিচারের দোকান ‘জে এল ফার্নিসার’ অফিসে কোকের সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে পান করতে দেয়। কোক পান করে চিকিৎসক অচেতন হলে তাকে ধর্ষণ করে তা ভিডিও করা হয়। পরে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয় সজিব। এ ঘটনায় ওই চিকিৎসকের স্বামী তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়।
এছাড়া রাজধানীর রামপুরা থানায় নাজনীন আক্তার রীমা নামের এক নারীকে হত্যার হুমকি এবং ফোনে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এ ঘটনায় ওই নারী সজিবের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন গত ৩ জানুয়ারি। এর আগে ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর এক নারী সাংবাদিক সজিবের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা ও হত্যার হুমকির ঘটনায় একটি জিডি করেন। একই বছরে সজিবের বিরুদ্ধে কমলগঞ্জ থানার এসআই লিটন, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বদরুল হাসান, সিআইডির ইন্সপেক্টর দেবাশীস ও মৌলভীবাজার সদর থানার তৎকালীন ডিউটি অফিসার এ এসআই নাজমাবেগমকে ফোনে হুমকি ও অশ্লিল গালিগালাজ করার ঘটনায় একাধিক ডিজি ও মামলা রয়েছে।