Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

27kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ১২ মার্চ ২০১৬ : ফিলিপিন্সে যে পাঁচটি অ্যাকাউন্ট খুলে বাংলাদেশ ব্যাংকের আট কোটি ডলার সরানো হয়েছে, তার একটি ভুয়া স্বাক্ষরে খোলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দাবি করেছেন।
উইলিয়াম গো নামে ওই গার্মেন্ট ব্যবসায়ীর পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন করে পুরো ঘটনায় রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাকাতি শহরের জুপিটার স্ট্রিট শাখার ব্যবস্থাপক মাইয়া সানতোস দেগিতোকে দায়ী করেছেন।
ফিলিপিন্সের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই অর্থপাচারের ঘটনার তদন্তের মধ্যে দেগিতোর বিদেশ যাওয়া একদিন আগেই আটকে দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ১১ কোটি ডলার গত মাসে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে সরানো হয় বলে প্রকাশ পেয়েছে।
এর মধ্যে ৮ কোটি ডলার ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকের পাঁচটি অ্যাকাউন্টে সরানো হয় বলে দেশটির সংবাদপত্র ইনকোয়ারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে অর্থ পরে ক্যাসিনোর মাধ্যমে বৈধ করে করে বিদেশে পাচার হয়ে যায়।
ওই পাঁচটি অ্যাকাউন্টের একটি যার প্রতিষ্ঠানের নামে কয়েক মাস আগে খোলা হয়েছিল, সেই গো’র আইনজীবী র‌্যামন এসগিরা শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেন বলে ইনকোয়ারার জানিয়েছে।
ম্যানিলায় এই সংবাদ সম্মেলনে গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠান সেঞ্চুরিটেক্সের মালিক গো না থাকলেও তার একটি বার্তা উপস্থাপন করেন আইনজীবী এসগিরা, তাতে ব্যাংকের নারী ব্যবস্থাপক দেগিতো দায় স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করা হয়।
সগিরা বলেন, “অ্যাকাউন্টটি পুরোপুরি ভুয়া। গো’র স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তা খুলেছিলেন দেগিতো।
“ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর গত ২৩ ফেব্র“য়ারি দেগিতো ওই অ্যাকাউন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আমার ক্লায়েন্টকে। গো প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে ১ কোটি পেসো ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাতেও রাজি না হলে ঘুষের প্রস্তাব ২ কোটি ডলারে উঠে। কিন্তু তাতেও আমার ক্লায়েন্ট রাজি হননি।”
রিজল ব্যাংকে যে পাঁচটি অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ সরানো হয়েছিল, সেই অ্যাকাউন্টধারী তিনজনকে গো চেনেন না বলে দাবি করেন এসগিরা। তবে অন্য অ্যাকাউন্টারী চীনা-ফিলিপিনো ব্যবসায়ী কিম অংয়ের সঙ্গে তার পরিচয় রয়েছে।
ব্যবস্থাপক দেগিতো এবং রিজল ব্যাংকের বিরুদ্ধে গো মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তার আইনজীবী। গো গত ১০ বছরে কোনো ক্যাসিনোতে যাননি বলেও দাবি করেন তিনি।
এসগিরা অবশ্য স্বীকার করেছেন, ব্যাংকের নারী কর্মকর্তা দেগিতোর সঙ্গে ব্যবসায়ী জো’র চেনাজানা আগে থেকেই ছিল।
গো’র অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে দেগিতোর আইনজীবী ফেরদি তোপাসিও এখনই কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, তার মক্কেল ‘সময় হলেই’ সব বলবেন।
এই আইনজীবী আগে বলেছিলেন, ওই পাঁচটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই খুলেছিলেন দেগিতো। এখন তাকে ‘বলির পাঠা’ বানানো হচ্ছে দেখে তদন্তকারীদের কাছে মুখ খুলতে চান তিনি।
দেগিতো শুক্রবার স্বামী-সন্তানকে নিয়ে জাপান যেতে চেয়েছিলেন। ম্যানিলা বিমানবন্দরে তাকে আটকে দেয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
এদিকে রিজল ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লরেঞ্জা তান তদন্তের স্বার্থে দায়িত্ব পালন থেকে ছুটি নিয়েছেন বলে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে।
তান পদত্যাগ করেছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার এক বিবৃতিতে তার আইনজীবী ফ্রান্সিস লিম বলেছেন, পদত্যাগ নয়, তদন্ত যাতে বাধাহীন হয়, সেজন্য ছুটি নিয়েছেন ব্যাংক প্রেসিডেন্ট।