খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ ২০১৬ : অনেক জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার পর তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেসসচিব ইহসানুল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে তিনি বলেছেন, আমি পদত্যাগের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। মঙ্গলবার সকালে এক বিফ্রিংয়ে তিনি জানান, ‘দেশের স্বার্থে আমি পদত্যাগ করতে প্রস্তুত রয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষায় আছি, সম্মান নিয়ে বিদায় নিতে চাই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় সমালোচিত গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, গতকাল সোমবার বিকেলে তিনি ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন। রাতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে তাঁর বাসায় গিয়ে দেখা করেছেন। অর্থমন্ত্রী তাঁকে বলেছেন, তিনি চলে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভালো চলবে।
গভর্নর বলেন, ‘আমি আমার বিবেক দ্বারা চালিত হই। মনে করি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি না বললে আমার পদত্যাগ করা উচিত হবে না। সাত বছর দায়িত্ব পালন করেছি, বাংলাদেশ ব্যাংককে সন্তানের মতো মনে করেছি। রিজার্ভ থেকে চুরি হোক, এটা আমি কখনো চাইনি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আজ বেলা আড়াইটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করবেন। এর আগে গতকাল সোমবার দুপুরে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে একটা পরিবর্তন হবে। অর্থমন্ত্রী কথা বলবেন, বিবৃতি দেবেন, গভর্নর আসবেন দেখা করতে—এসব খবরে গতকাল দিনভর সচিবালয়ে উৎসুক ছিলেন সাংবাদিকেরা। গভর্নর আতিউর রহমানকে নিয়ে দিনভর ছিল নানা গুঞ্জন। সরকারি দলেও ছিল সমালোচনা। এতে দেশে ফিরতেই গভর্নর নানামুখী চাপের মধ্যে পড়েন।
নতুন গভর্নর হচ্ছেন ফজলে কবির
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হচ্ছেন সাবেক অর্থসচিব ফজলে কবির। তাঁকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মন্ত্রী বলেন, ‘সব ঠিক হয়ে গেছে।’
ফজলে কবির বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। ১৮ মার্চ তাঁর দেশে ফেরার কথা। তিনি দেশে ফেরার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তিনি এ পদে নিয়োগ পাবেন।
প্রসঙ্গত,যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৮০৮ কোটি টাকা চুরির ঘটনা নিয়ে সরকার ও বিভিন্ন মহল থেকে গভর্নরের ওপর চাপের কারণেই ড. আতিউর রহমানের এই পদত্যাগ।