খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০১৬: হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংকে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের দুই কোটি ডলার চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শ্রীলঙ্কার ভুয়া একটি বেসরকারি সংস্থার ছয় পরিচালকের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির আদালত।
কলম্বোর হাকিম গিহান পিলাপিতিয়া সোমবার অভিবাসন ও নির্গমন অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রককে এই আদেশ দেন।
শালিকা ফাউন্ডেশন নামে ওই সংস্থার ছয় পরিচালক হলেন- দেহিওয়ালা এলাকার গামাজ শালিকা পেরেরা, সানজেবা টিসা বান্দ্রা ও শিরানি ধাম্মিকা ফার্নান্দো এবং পিলিয়ানডালা এলাকার ডন প্রসাদ রোহিতা ও হোমাগামা এলাকার নিশান্থা নালাকা ওয়ালাকুলুয়ারাচ্চি।
পুলিশের তদন্তের ভিত্তিতে ওই এনজিওর বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা শাখার অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচারক তাদের দেশত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বলে দেশটির গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, চলতি বছর ২৬ জানুয়ারি প্যান এশিয়া ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে দেহিওয়ালার আত্তিদিয়ার শালিকা ফাউন্ডেশন। এর কয়েকদিন পর ওই হিসাবেই সুইফট মেসেজের মাধ্যমে দুই কোটি ডলার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু ফাউন্ডেশন বানানে ভুল থাকায় সন্দেহ হয় প্যান এশিয়ার কর্মকর্তাদের। তারা ওই অর্থ অ্যাকাউন্টে জমা না করে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানালে লোপাটের চেষ্টা আটকে যায়।
অবশ্য তার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে ফেলা হয় ফিলিপিন্সের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের কয়েকটি অ্যাকাউন্টে।
শ্রীলঙ্কার পুলিশ বলেছে, নিম্ন আয়ের পরিবারকে সহায়তার নামে শালিকা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে ব্যাংকে জমা দেওয়া নথিপত্রে। কিন্তু কলম্বোর যে বাড়ির ঠিকানা সেখানে দেওয়া হয়েছে, তা বন্ধ পাওয়া গেছে। ওই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগের অন্য কোনো মাধ্যমও পাওয়া যায়নি।
ইতিহাসের অন্যতম বড় এই রিজার্ভ চুরির ঘটনাটি ৪ ফেব্র“য়ারি ঘটলেও তা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে প্রায় এক মাস পর ফিলিপিন্সের তদন্তকারীদের বরাতে দেশটির একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে।
এরপর ফিলিপিন্সের তদন্তে বেরিয়ে আসতে থাকে নতুন নতুন তথ্য। জানা যায়, যে ৮১ মিলিয়ন ডলার সেখানে স্থানান্তর হয়েছে, তার অর্ধেকই চলে গেছে ক্যাসিনোর জুয়ার টেবিলে।
বাকি টাকার কোনো হদিস ফিলিপিন্সের তদন্তকারীরা পাননি। বাংলাদেশের টাকা ফেরত পাওয়ার কোনো আশাও তারা দেখাতে পারেননি।