খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০১৬: প্রথম ধাপের ইউপি ভোট ঘিরে সহিংসতায় ২২ জন নিহত হয়েছে দাবি করে এরজন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছে বিএনপি।
দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কোনো ভূমিকাই পালন করেনি, শুধু দায়সারাভাবে কিছু কথা বলে গেছে।”
নির্বাচনের একদিন পর বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, তফসিল ঘোষণার থেকে ২২ মার্চ ভোটের দিন পর্যন্ত সারাদেশে ৭১২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ‘সংঘাত-সংঘর্ষ-সহিংসতা, পুলিশ-র্যাব-বিজিবির গুলি এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পৈশাচিক হামলায়’ এই ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে তিনজন প্রার্থীও রয়েছেন বলে এই বিএনপি নেতার দাবি।
“আজকে এতোগুলো প্রাণহানির জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। তাদের এই আনুগত্যমূলক আচরণ, সেবাদাশমূলক আচরণের কারণে এতোগুলো জীবনহানি হল, এতো মানুষ নিহত হল, মানুষের অঙ্গহানি ঘটল।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের ‘মানসিক সুস্থতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, “নির্বাচনের আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, প্রশাসনের কাক্সিক্ষত সহযোগিতা পাচ্ছি না। যদি কোথাও সংঘাত-সংঘর্ষ হয় তবে পুলিশকে দায়-দায়িত্ব নিতে হবে। আবার নির্বাচন শেষে তিনিই (সিইসি) বললেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তার এই ধরনের কথা-বার্তায় মনে হয়েছে, তিনি মানসিক অস্থিরতায় ভুগছেন।”
সিইসি প্রশাসন ও পুলিশকে নিয়ে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, সে বিষয়গুলোতে তার নিজস্ব ক্ষমতা প্রয়োগ করে ব্যবস্থা নিলে এতোগুলো মানুষের প্রাণহানি ঘটত না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন সরকারের কথামতো কাজ করে বলে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “সিইসি মাঝে মাঝে বজ্রাদপি কঠিন কথা বললেও যখন সরকারের দিকে তাকান তখন কুসমাদপি কোমল হয়ে পড়েন। কারণ তিনি আনুগত্য বিসর্জন দিতে চান না। রক্তস্রোতের মধ্যে নির্বাচনকে ভাসিয়ে দিয়ে হলেও তিনি সরকারের ইচ্ছাপূরণের সর্বোচ্চ আত্মনিয়োগ করেন।”
তিনি বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশনের স্নায়ু শিথিল হয়ে গেছে, মস্তিষ্ক অলস হয়ে গেছে। হৃদয় দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণেই তারা (ইসি) আজ নিথর, লক্ষ্যভ্রষ্ট ও বিপথগামী একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে। সংঘাতে মানুষের মৃত্যুতে তারা শিহরিত হয় না, অসংখ্য মানুষের অঙ্গহানি তাদের বিবেককে নাড়া দেয় না। তাদের চাকরিতে যাতে কোনো ছেদ-যতি না ঘচে তারা সেই প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে।”
নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।
এছাড়া বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও যুব দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরবসহ ১৭ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বুধবার জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। খুলনা সিটি করপোরেশন বরখাস্ত মেয়র মনিরুজ্জামান মনির নিঃশর্ত মুক্তিও দাবি করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের ছাত্রদল নেতা তুন-এর হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার দাবিও জানান তিনি।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালযে সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবীর খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, রফিক শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।