খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৫ মার্চ ২০১৬ : চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধার এবং জড়িতদের চিহ্নিত করার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে ফিলিপাইনের কর্তৃপক্ষ মামলা করার পাশাপাশি তাদের একটি সংসদীয় কমিটিতে শুনানি করছে। এ মাসের শেষে আবার সেখানে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ফিলিপাইনের কর্তৃপক্ষের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তবে আইনগত দিক থেকে চুরি যাওয়া অর্থের প্রতি দাবি জানিয়ে তা উদ্ধার করে ফেরত দেয়ার জন্য ফিলিপাইনের কর্তৃপক্ষকে লিখিত অনুরোধ করার বিষয় রয়েছে। বাংলাদেশ এখন অনুরোধের চিঠি পাঠানোর এই আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম।
তিনি বলছিলেন, “এক রাষ্ট্র যখন অন্য রাষ্ট্রের কাছে অনুরোধ করে,সেটাকে আইনগত সহায়তা এবং সমঝোতার আওতায় অনুরোধ বলা হয়ে থাকে।এই অনুরোধ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আমাকে চিঠি দিয়েছে।আমার মাধ্যমে এই চিঠি যাবে।এর প্রক্রিয়া চলছে।”
তিনি আরও বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন প্রতিনিধি এ ধরণের অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যোগাযোগ করেন। সেজন্য চিঠি তৈরির জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। কমিশন তৈরি করে পাঠালে তা এটর্নী জেনারেলের মাধ্যমেই ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষের কাছে যাবে। এমন প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তা।তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
এটর্নী জেনারেল উল্লেখ করেছেন, এখন ফিলিপাইনের কাছে আইনগতভাবে যে চিঠি পাঠানো হচ্ছে, তাতে একটা সাধারণ অনুরোধ থাকবে।কিন্তু পরে সুনির্দিষ্ট অনুরোধ জানানোর প্রশ্ন আসবে। তিনি বলেছেন,আইন অনুযায়ী অপরাধ যেখানে সংঘঠিত হয়েছে, সেই ফিলিপাইনে যেহেতু মামলায় তদন্ত চলছে। মামলার ফলাফল কি হয় এবং সেখানে চুরি হওয়া অর্থ কতটা উদ্ধার হয়, এসব জানার পর বাংলাদেশকে সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে আবার অনুরোধ জানাতে হবে।ফলে পরে সুনির্দিষ্ট অনুরোধ করার জন্য বাংলাদেশকে এখন অপেক্ষা করতে হবে ফিলপাইনের ফলাফলের দিকে।
এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন,বাংলাদেশেও কেউ জড়িত কিনা, সে ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপের বিষয়ও সুনির্দিষ্ট অনুরোধের ক্ষেত্রে তুলে ধরতে হয়। তিনি উল্লেখ করেছেন,এমন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা প্রায় ২১কোটি টাকা সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছিল। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি যাওয়া অর্থের বড় অংশ আট কোটি দশ লাখ ডলার ফিলিপাইনে গেছে, তা উদ্ধার করার ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত কিছু জানা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকে মুখপাত্র শুভংকর সাহা বলেছেন, ব্যাংকের আইন উপদেষ্টাকেও পুরো ঘটনার আইনগত দিক খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ কূটনৈতিক দিক থেকেও ফিলেপাইনের সাথে যোগাযোগ রাখছে।