খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৫ মার্চ ২০১৬ : বিএনপির নির্বাহী কমিটিতে কর্মকর্তা পর্যায়ে ৫৬টি পদ বেড়েছে। এতে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে সদস্য এখন ৪০৭ জন। চেয়ারপারসন আরও ১০ শতাংশ সদস্য বাড়াতে পারবেন। নিজের চাহিদামতো যত জন ইচ্ছা ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদার উপদেষ্টা নিয়োগ দিতে পারবেন চেয়ারপারসন। আরও আছে ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটি। পাশাপাশি এবার কার্যকর করা হচ্ছে বিষয়ভিত্তিক ২৫টি উপকমিটি। প্রতিটি উপকমিটিতে থাকবে ১২ জন করে। সব মিলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হবেন প্রায় ৮০০ জন।
গত শনিবার অনুষ্ঠিত বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আকার বড় করে গঠনতন্ত্রের সংশোধনী পাস করা হয়। সংশোধনী অনুযায়ী, ভাইস চেয়ারম্যান পদ ১৭ থেকে বাড়িয়ে ৩৫টি করা হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ হবে প্রশাসনিক বিভাগ অনুযায়ী। সে হিসাবে এখন সাংগঠনিক সম্পাদক হবেন আটজন। সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক একজন করে বাড়িয়ে বিভাগমতো দুজন করা হয়েছে।
ক্ষুদ্রঋণবিষয়ক এবং শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বিষয়ক সাতটি সহ-সম্পাদক পদ, ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক একজন বাড়িয়ে চারজন এবং দুটি করে প্রশিক্ষণ, পরিবার কল্যাণ ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সহ-সম্পাদক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। একটি করে সহ-সম্পাদকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে—অর্থনীতি, জলবায়ু, প্রশিক্ষণ, গণশিক্ষা, বন ও পরিবেশ, স্বনির্ভর, তাঁতিবিষয়ক, তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক, প্রবাসীকল্যাণ, বিজ্ঞান প্রযুক্তি, শিল্প ও বাণিজ্য, মানবাধিকার, উপজাতিবিষয়ক পদে।
এর আগে বিএনপির গঠনতন্ত্রে বলা ছিল, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হবেন ১৫ জন। কিন্তু তা আসলে মানা হতো না। এখনো চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আছেন ৩৫ জন। এবার এটি সংশোধন করে বলা হয়েছে, কতজন উপদেষ্টা হবেন, তা নির্দিষ্ট থাকবে না। এটি চেয়ারপারসনের ওপর নির্ভর করবে।
এর বাইরে ২৫টি বিষয়ভিত্তিক উপকমিটি করা হয়েছে। এসব কমিটিতে ১২ জন করে থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। উপকমিটিগুলো হচ্ছে অর্থ ও পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, আইনশৃঙ্খলা ও বিচারব্যবস্থা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, গবেষণা, শিল্প ও বাণিজ্য, স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন, নারী ও শিশু উন্নয়ন, যুব উন্নয়ন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রম ও প্রবাসী কল্যাণ, যোগাযোগ ও গণপরিবহন, এনার্জি ও খনিজ সম্পদ, মানবাধিকার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, মুক্তিযুদ্ধ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্রঋণ, সুশাসন ও জনপ্রশাসন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, জাতীয় সংহতি ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী।
দলীয় সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় কমিটির আকার বাড়ানো নিয়ে দলে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনের আলোচনাই আছে। নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন। সামনেও আন্দোলন অপেক্ষা করছে। অনেকে নির্যাতিত হয়েছেন। সবাইকে মূল্যায়ন করার লক্ষ্যে কমিটির আকার বড় করা হয়েছে, যাতে কমিটি গঠনের পর কোনো ধরনের সমস্যা তৈরি না হয়। এই বিষয়টিকে অনেকে ইতিবাচক বলছেন।
আবার কেউ কেউ বলছেন, এত বড় কমিটি হলে শুধু নেতার সংখ্যাই বাড়ে। কোনো কাজ হয় না। নেতারা মাঠে নামেন না। বিশেষ করে চাইলেও অনেক সময় কমিটি বড় হওয়ায় বৈঠক করা সম্ভব হয় না। বিএনপির সম্মেলনে কাউন্সিল অধিবেশনে মাঠের নেতাদের অনেকের বক্তব্যেও বিষয়টি উঠে এসেছিল। মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি থানা বিএনপির সভাপতি খান মনিরুল বলেছিলেন, দলে একশ্রেণির নেতারা টিভিতে ছবি দেখানোর জন্য ব্যস্ত থাকেন। আরেক শ্রেণি বড় বড় পদ নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু ফোন করলে পাওয়া যায় না। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ জাতীয় নির্বাহী কমিটির আকার ছোট করার দাবি জানিয়ে কাউন্সিলে বলেছিলেন, ‘অনেক বড় কমিটি, কিন্তু কাজের নাম লবডঙ্কা।