Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

41kখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৫ মার্চ ২০১৬ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শপথ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ, অসাম্প্রদায়িক ও উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রতিটি বাঙালিকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে দেশের উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করার মধ্যদিয়ে এদেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদাপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত করবেন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি এই আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে এবং স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে দিতে হবে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুফল বাংলার প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। সরকার এই লক্ষ্য অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার স্বপরিবারে জাতির পিতা হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের বিচারের রায়ও কার্যকর হবে। স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি এখনও দেশের গণতন্ত্র ও সরকারের অব্যাহত উন্নয়নের ধারা বানচাল করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এ সকল অপশক্তির সকল অপতৎপরতা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে বাণীতে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে তখনই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশ ও জাতির উন্নয়নে নিবেদিত থেকেছে। গত সাত বছরে আমরা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ক্রীড়া, তথ্যপ্রযুক্তি, বৈদেশিক সম্পর্ক, নগর উন্নয়ন, গ্রামীণ উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, নারী উন্নয়নসহ প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের ক্রয়ক্ষমতা, মাথাপিছু আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রপ্তানি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থা আমাদের প্রশংসা এবং পুরস্কৃত করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা টেলিগ্রাম, টেলিপ্রিন্টার ও তৎকালীন ইপিআর-এর ওয়ারলেসের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এই ঘোষণা প্রচারিত হয়।
তিনি বলেন, এর আগে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতার ডাক দেন। তিনি আরো বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তিনি বাঙালি জাতিকে শত্রুর মোকাবিলা করার নির্দেশ দেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পরিচালিত ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসী এবং প্রবাসী সকল বাঙালিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২৬ মার্চ আমাদের জাতির আত্মপরিচয় অর্জনের দিন। পরাধীনতার শিকল ভাঙার দিন।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনকে, যাঁদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে কাঙ্খিত বিজয় অর্জিত হয়েছে তাদের শ্রদ্ধা জানান। একই সাথে তিনি জাতীয় চার নেতা, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা, যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন তাঁদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এ ছাড়াও প্রধামন্ত্রী সকল বন্ধুরাষ্ট্র, সংগঠন ও ব্যক্তির প্রতি, যাঁরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অকৃপণ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।