খোলা বাজার২৪ সোমবার, ২৮ মার্চ ২০১৬: সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামের অন্তর্ভুক্তির বিধান নিয়ে রিট আবেদনের শুনানির বিরোধিতায় জামায়াতে ইসলামী হরতাল ডাকলেও ঢাকার রাজপথে দিনের শুরুতে তার তেমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।
সোমবার সকাল থেকে রাজধানীর কোথাও জামায়াত-শিবির কর্মীদের তেমন কোনো তৎপরতা বা মিছিল-পিকেটিংয়ের খবর আসেনি। হরতালের প্রথম দুই ঘণ্টায় গোলযোগেরও কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন থানার পুলিশ কর্মকর্তারা।
সকালে হরতালের শুরু থেকেই ঢাকার প্রতিটি মোড়ে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান। কোথাও কোথাও অটোরিকশা ও বাইক চালকদের থামিয়ে তল্লাশিও করা হচ্ছে। হরতালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন র্যাব সদস্যরাও।
সকালের শুরুতে রাস্তায় ব্যক্তিগত যানবাহন ও গণপরিবহন ছিল অন্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা। অফিসযাত্রী ও কর্মজীবী মানুষের ভিড় দেখা গেছে অন্য দিনের মতোই।
হরতালে নিরাপত্তার কারণে যাত্রী কম থাকে বলে মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়া হয়নি। তবে ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন গন্তব্যের বাস ছেড়ে গেছে বলে পরিবহন কর্মীরা জানিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের নামে রোববার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের এই বার্তা দেয় জামায়াতে ইসলামী, যে দলের নেতারা একাত্তরে ধর্মের নামে যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়েছিলেন বলে আদালতের রায়ে উঠে এসেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিয়ে দেশকে ধর্মহীন রাষ্ট্রে পরিণত করার গভীর চক্রান্তের প্রতিবাদে’ তাদের এই হরতাল।
সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময়ে কার্যত বিরোধী দলবিহীন চতুর্থ জাতীয় সংসদে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী অনুমোদন পায়। এর দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে যুক্ত ২ (ক) দফায় বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে’।
ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ১৯৭১ সালে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে এই পরিবর্তনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তখনই হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করেন ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক।
২৮ বছর আগের ওই আবেদনের ভিত্তিতে দেওয়া রুলের ওপর সোমবার হাই কোর্টের বৃহ্ত্তর বেঞ্চে শুনানি শুরু হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে তা দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।