খোলা বাজার২৪ সোমবার, ২৮ মার্চ ২০১৬: এক হাতে ফুলের মালা, আরেক হাতে লাগেজ—বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা সেরে দ্রুত বেরিয়ে এলেন তামিম ইকবাল। মুখটা মলিন। ছবিটি গত বছর ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে ফেরার পর। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ বাজে গিয়েছিল তামিমের। ৬ ম্যাচে করেছিলেন ১৫৪ রান। দল ভালো করলেও নিজের অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সে মুখ থেকে হাসিটা তাঁর মিলিয়ে গিয়েছিল কোন সুদূরে।
কালও প্রায় একই ছবি। বাংলাদেশ দলের মধ্যে সবার আগে বেরিয়ে এলেন তামিম। কিন্তু মুখে হতাশার আঁধার। এবার টুর্নামেন্ট তামিমের দুর্দান্তই গেছে। তবুও কেন হতাশার আঁকিবুঁকি? সুপার টেনে দলের ব্যর্থতায় আড়াল হয়ে গেছে তাঁর উজ্জ্বল পারফরম্যান্স। ৬ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি, ৭৩.৭৫ গড়ে করা ২৯৫ রানটা তাই অর্থহীন মনে হচ্ছে তামিমের, ‘প্রায় ৩০০ রান, ৭০-এর ওপর গড়, ব্যক্তিগতভাবে সেরা বিশ্বকাপই গেছে। সুপার টেনে যদি দলকে জেতানো একটা ইনিংস খেলতে পারতাম, তাহলে আরও তৃপ্তি পেতাম। যতই রান করুন, দিন শেষে দল না জিতলে এই রানের আসলে কোনো অর্থ থাকে না।’
অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগে তাসকিন আহমেদ-আরাফাত সানিকে হঠাৎ হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ বেঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে পেল আরেকটি দুঃসংবাদ—জ্বর ও পেটের পীড়ায় খেলতে পারবেন না তামিম। ম্যাচটি না খেলতে পারায় আক্ষেপের শেষ নেই বাঁহাতি ওপেনারের, ‘ওই দিন শরীরের অবস্থা এমনই খারাপ ছিল, যদি খেলতাম হয়তো মাঠ থেকে সরাসরি দেশেই ফিরে আসতে হতো। অসুস্থতার প্রভাব ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেও পড়েছে। খেয়াল করেছেন, ভারতের বিপক্ষে শারীরিকভাবে কিছুটা অস্বস্তিতে ছিলাম। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে একটা ম্যাচ না খেলতে পেরে খুবই খারাপ লেগেছে। বিশ্বের অন্যতম সেরা দলের বিপক্ষে ভালো খেললে পাওয়ার থাকে অনেক কিছু।’
অস্ট্রেলিয়া, ভারতের বিপক্ষে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ইডেনে কেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওভাবে ভেঙে পড়া? উত্তর জানা নেই তামিমেরও, ‘১৪৫ রান অবশ্যই তাড়া করা মতো স্কোর ছিল। উইকেট কঠিন হলেও সেটি এমন ছিল না যে আমরা ৭০ রানেই অলআউট হয়ে যাব। ভালো খেলছিলাম টুর্নামেন্টে। কিন্তু শেষ ম্যাচে কেন এমন অল্প রানে অলআউট হয়ে যাব, নিজেরও জানা নেই।’
ছোট ছোট ভুলের যোগফলেই বড় ব্যর্থতা। তবুও এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ তামিম খুঁজে নিচ্ছেন অর্জনের কিছু নুড়ি-পাথর, ‘আমরা টি-টোয়েন্টি ভালো খেলছি, মানে এই নয় এই সংস্করণে অনেক ভালো দল হয়ে গেছি। হয়তো বড় ম্যাচগুলো জিততে পারিনি, তবে কিছু অর্জন আছে। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সঙ্গে খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। ভারতের বিপক্ষে তো প্রায় জিতেই গিয়েছিলাম আমরা। এই যে বড় দলগুলোর সঙ্গে লড়াই করেছি, ছয় মাস আগেও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারতাম না তাদের হারিয়ে দেব। ৫-১০ শতাংশ ভুল না করলে আজ দলের চেহারাটা অন্যরকম হতে পারত।’
আজ না হোক, এসব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে নিশ্চয় টি-টোয়েন্টিতে অন্য বাংলাদেশকেই দেখা যাবে। তামিম, ভুল বলা হলো