Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

38খোলা বাজার২৪, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০১৬ : দোকানের ভেতর থরে থরে সাজানো আছে লুঙ্গি, গামছা, তোয়ালে ও রুমাল। আছে প্রতিটি পণ্যের গায়ে দাম লেখা ট্যাগ। পণ্য কেনার পর ক্রেতারা যাতে নির্দিষ্ট দাম দিতে পারেন, এ জন্য রাখা আছে একটি ক্যাশবাক্সও। নেই শুধু বিক্রেতা। ‘ভিন্নরকম দোকান’ নামের বিক্রেতাহীন এই দোকানটি কুষ্টিয়ার কুমারখালী রেলওয়ে স্টেশনে। ‘ভিন্নরকম দোকান’-এ কোনো বিক্রেতা নেই।
দোকানের মালিক হামিদুর রহমান ওরফে শিপন। পেশায় তিনি হকার। হামিদুর বলেন, চালু হওয়ার পর থেকে সাত মাস ধরে দোকানটি বিক্রেতা ছাড়াই চলছে। তিনি মূলত হকার। শুধু দোকানে বসে থাকলে পরিবারের খরচ জোগাতে পারবেন না। তাই বিভিন্ন স্টেশনে গিয়ে লুঙ্গি-গামছা বিক্রি করেন। একই সঙ্গে বিক্রেতাহীন দোকানও খুলেছেন। ক্রেতারা এসে পছন্দমতো জিনিস কিনে মূল্য দেখে টাকা ক্যাশবাক্সে রেখে চলে যান।
দোকানে না বসার বিষয়ে হামিদুর বলেন, ‘দোকানে বসে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। কারণ সংসার চালানোর রোজকার খরচ দোকান থেকে না-ও উঠতে পারে।’ তিনি জানান, দোকানে কোনো বিক্রেতা না থাকলেও চুরি হয় না।
‘ভিন্নরকম দোকান’-এ কোনো বিক্রেতা নেই। হামিদুর রহমান বলেন, ‘মানুষকে বিশ্বাস করি। তাঁদের বিশ্বাসের ওপর দোকান করেছি। সাত মাসে এভাবেই দোকান চলছে। মাসিক ৫০০ টাকায় দোকানটি ভাড়া নিয়েছি। প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা বিক্রি হয়। দোকানের জিনিস কোনো দিন চুরি হয়নি। এমনকি বিক্রির টাকাও কম পাইনি। কোনোদিনও হিসাবে টাকা কম পড়েনি।’
প্রতিদিন সকাল নয়টায় দোকান খোলা রেখে বের হন তিনি। রাত নয়টায় এসে দোকান বন্ধ করেন। ফেরি করে লাভ হয় ৩০০ টাকার মতো। আর দোকান থেকে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই শ টাকা লাভ হয়। সব মিলিয়ে ভালোই চলে হামিদুরের সংসার।
দোকানটির পাশেই চাঁদ লাইব্রেরি। লাইব্রেরির মালিক শুকচাঁদ বলেন, ‘সাত মাস ধরে দেখছি শিপন ব্যবসা করছে। দোকান খোলা রেখে চলে যায়। এভাবেই কেনাকাটা হয়। স্টেশনে আসা যাত্রী, বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বেশির ভাগ সময় এসব কেনাকাটা করে। চলতি পথের মানুষও কেনেন।’