Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

42খোলা বাজার২৪, শনিবার, ২ এপ্রিল ২০১৬: নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপির ইউপি ভোট বর্জনের হুমকিকে ‘ব্যর্থতার লজ্জায়’ সরে যাওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, “নির্বাচনে বিএনপি জনগণের কাছে যেতে ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণে তাদের চরম ভরাডুবি হয়েছে।
“তাই লজ্জার হাত থেকে বাঁচতে তারা এখন নির্বাচন থেকে বেরুনোর চিন্তা করছে।”
চলমান ইউপি নির্বাচনে প্রথম দুই পর্বের ভোটে ব্যাপক জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ তুলে বিএনপি হুমকি দিয়েছে, তৃতীয় পর্বের ভোটেও চিত্র না পাল্টালে তারা পরবর্তী তিন পর্বের ভোট বর্জন করবে।
ইসির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দ্বিতীয় পর্বে ৫৪ শতাংশ ভোট পড়েছে নৌকা প্রতীকে, ধানের শীষে পড়েছে ১৭ শতাংশ। প্রথম ধাপেও ৭১২ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ ৫৪০টিতে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়।
শনিবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের এক সভার পর ভোট নিয়ে বিএনপির অভিযোগের প্রতিক্রিয়া সাংবাদিকদের জানান হানিফ।
তিনি বলেন, “কেউ যদি ব্যর্থ হয়ে নির্বাচন বর্জন করতে চায়, তাহলে তো অন্য কারও কিছু বলার থাকে না। বিএনপিকে সুস্থ রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসতে হলে এ ব্যর্থতা মেনে নিতে হবে।”
সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি যে নাশকতার আন্দোলন চালিয়েছিল, সে কারণে জনগণ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়েছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা।
অন্যদিকে উন্নয়নের কারণে জনগণ সরকারের প্রতি আস্থা পাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের একটি জরিপেও দেখা গেছে যে ৮০ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনার সরকারের সুশাসনের প্রতি আস্থাশীল। ভোটে তো তার প্রতিফলন ঘটবে এটাই স্বাভাবিক।”
বিদেশিদের জিজ্ঞাসা কেন?
ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়ে হানিফ বলেন, বাংলাদেশিরাই অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশকে টেনে আনছে।
“আমাদের দেশের মানুষের একটা মারাত্মক প্রবণতা আছে। সেটা হল বিদেশি কোনো মানুষ দেখলেই আমরা মনে করি, সে সাক্ষাৎ ভগবান। আমাদের দেশের ছোটখাটো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের কাছে জিজ্ঞাস করার কোনো যৌক্তিকতা আছে?”
“বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আছেন। ওই সব দেশের কেউ কি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্ন করে? ভারতের কোনো সাংবাদিক কি প্রভাবশালী কোন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করে?”
“কিন্তু আমাদের মধ্যে এ প্রবণতাটা বেশি। কোনো কিছু হলেই আমরা বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে দৌড়ে চলে যাই। এ মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে,” বলেন হানিফ।
নির্বাচনের সহিসংতাকে রাজনৈতিক সংঘাত বলতে নারাজ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “একাধিক মেম্বার প্রার্থী থাকার কারণে দেখা যায় সামাজিক, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের কারণে কিছু সহিংসতা হচ্ছে।
“এসব কীভাবে এড়ানো যায়, সে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষতে না ঘটে সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।”
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে যৌথসভার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হয় হানিফের।
ওই সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরু উপস্থিত ছিলেন।