খোলা বাজার২৪, রোববার, ৩ এপ্রিল ২০১৬: নারীদের জন্য যেন অগোছালো থাকা মানে মহাপাপ। সামান্য কথাবার্তাতে যেমন সতর্ক থাকতে হয় তেমন বেশভূষাতেও সর্বত্র সঠিক থাকা চাই। পারফেক্ট হওয়ার চাপে নারীদের মাঝে প্রচণ্ড মানসিক চাপ পড়ে বলে মনে করছেন কলামিস্ট জুডিথ উথস। এ বিষয়টি সম্প্রতি তিনি তুলে ধরেছেন টেলিগ্রাফে লেখা তার কলামে। বর্তমান যুগে নারীদের বিচার করার অন্যতম মাপকাঠি হয়ে উঠেছে তাদের ‘নিখুঁত’ থাকার বিষয়টি। সবক্ষেত্রেই নারীদের যেন নিখুঁত থাকতে হবে, এমনটাই রীতি। এ নিখুঁত থাকার চাপ তৈরি হয়েছে ক্লাসরুম থেকে বেডরুম পর্যন্ত সর্বত্রই। এমনকি বেডরুমেও নারীদের নিস্তার নেই নিখুঁত না হয়ে।
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের এক গবেষণায় নারীদের নিখুঁত থাকার এ চাপের বিষয়টি উঠে এসেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, পুরুষদের প্রত্যাশায় বেডরুমে নারীর সঠিক ভূমিকা কী হওয়া উচিত তাও অনেকটা ঠিক হয়ে গিয়েছে।
পর্নোগ্রাফির প্রসারে বর্তমানে বেডরুমে নারীর ভূমিকা কী হওয়া উচিত, সে বিষয়টিও যেন ঠিক হয়ে গিয়েছে। এ কারণে নারীর যৌন জীবনও কেমন হওয়া উচিত তাও যেন আগে থেকে নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। এতে বেডরুমেও বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে নারীর মাঝে। বিভিন্ন সেলিব্রিটি নারীর চরিত্রের ফটোশপকৃত ছবি এখন মানুষের আদর্শ। তারা নারীকে দেখতে চায় সেই আদর্শ নারীর মতোই। কিন্তু সবাই যে তেমন হবে, এমনটা কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয়। এ চাপের সূত্রপাত আমাদের সমাজের মাঝেই। খুব ছোটবেলাতেই একজন ছেলে শিশু ও মেয়ে শিশুর মাঝে এ পার্থক্য গড়ে দেন বাবা-মা কিংবা পরিবারের সদস্যরা। এরপর তা চলতেই থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়তি এ চাপের কারণে নারীরা প্রায়ই সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারেন না। নারীর মাঝে বাড়তি দায়িত্ব এসে পড়ে নিজেকে ঠিক রাখার জন্য। যে নারীরা এ মাপকাঠি অনুযায়ী নিজেকে ঠিক রাখতে পারেন না, তাদের ওপর মানসিক চাপ যেন বাড়তেই থাকে। নিখুঁত হওয়ার এ চাপ অনেক নারীরই স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করে।