তনু হত্যার বিচার দাবি
খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০১৬: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও সংস্কৃতিকর্মী সোহাগী জাহান তনু ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে কোনো দৃশ্যমূলক অগ্রগতি না হলে আগামী ১১ তারিখের পর থেকে দেশেজুড়ে সব রকম সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস। আজ দুপুর ১টায় তনু হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত আইনের আওয়ায় এনে বিচারের দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে স্মারকলিপি দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ ও নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুসহ আট সদস্যের একটি প্রদিনিধিদল আজ জোটের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রসচিব এই স্মরকলিপি প্রদান করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষ থেকে তাঁর পিআরও শরীফ মাহমুদ অপু ও স্বরাষ্ট্রসচিবের পক্ষ থেকে তাঁর একান্ত সচিব এস এম ফেরদৌস এই স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট তাদের স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও সংস্কৃতিকর্মী সোহাগী জাহান তনু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আমরা ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। সংস্কৃতিকর্মী, ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ- সবাই এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবিতে আমরা গত ২৩ মার্চ প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৯ মার্চ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছি। তবে ১৬ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও এই ঘটনা তদন্তে কোনো দৃশ্যমূলক অগ্রগতি সাধিত হয়নি। এই বিষয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়াও দেশব্যাপী শিশু ও নারী নির্যাতন আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে যাওয়ায় জনগণের মনেও শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে তনুসহ সকল শিশু ও নারী নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দাবি জানাচ্ছি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় ‘১১ তারিখের পর যদি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয় তবে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের কি হবে’- এমন প্রশ্নের জবাবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘’এই বিষয়ে আমরা বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেব।’’ বিকাল ৫টার পর ঘরের বাইরে থাকা যাবে না এবং মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুখোশ নিষিদ্ধের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘’পহেলা বৈশাখের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ঘড়ির কাঁটা ধরে হবে না। আমরা বিকাল ৫টার পরও অনুষ্ঠান চালিয়ে যাব, আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরাই দেখব। আর নানা রংয়ের মুখোশ মঙ্গল শোভাযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ- এটার প্রতি নিষেধাজ্ঞা মানার প্রশ্নই ওঠে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যর মুখোশ পরিহিত কোনো ব্যক্তির প্রতি সন্দেহ হলে তারা সেটা খুলে দেখতে পারবে।’’ তবে, ভুভুজেলা নিষিদ্ধের বিষয়টিকে সাধুবাদ জানান এই সাংস্কৃতিক জোট নেতা।